‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’- এ স্লোগানেই গত ১৪ জুলাই রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের বিরোধিতা ও নিন্দা জানিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক কর্তৃক স্বৈরাচার হটানোর এক দফা আন্দোলনে সূচনার এ স্লোগান বিকৃত করার অভিযোগ উঠলে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রাত ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে ১৪ জুলাইয়ের অনুরূপ স্লোগান নিয়ে বের হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন হল ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জমায়েত হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’; বিকৃতি চলবে না, সাক্ষী আছে জনতা’; চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’; ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ১৪ জুলাই আমাদের যে স্লোগানটা ছিল সেটাই এ আন্দোলনের ইতিহাস। এটাকে কেউ পরিবর্তন করতে চাইলে আমরা তাদের রুখে দেব। এ স্লোগান কারও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কেউ নিজেদের স্বার্থে এই ইতিহাস বদলাতে পারবে না। যেসব সমন্বয়ক এখন স্লোগান বিকৃত করছেন তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই যে শিক্ষার্থীরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বেশিক্ষণ লাগবে না। তাই নিজেদের ভুল শুধরে নিন এবং বিতর্কিত কাজকর্ম থেকে দূরে থাকুন।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা ও আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিকরণের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?’ এই প্রশ্নোত্তরের পরই ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে বিক্ষোভে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ১৪ জুলাইয়ের এই মূল স্লোগানের পরিবর্তে নিজেদের ফেসবুক পোস্টে ‘কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার তুই রাজাকার’ বলে প্রচার করেন। যার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেন আবার সেই স্লোগানে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন তারা।