সরকারিভাবে মুরগির ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও বাজারে তা কার্যকর হয়নি। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন দর অনুসারে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা ও সোনালি মুরগি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। তাতে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেঁধে দেওয়া ওই দামে এই তিন পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম ও মুরগি।
রাজধানীর খিলক্ষেত, নতুনবাজার, মহাখালী কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, সরকারের নির্ধারিত ডিম ও মুরগির দাম মানছে না রাজধানীর বিক্রেতারা। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। আর প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা দরে। আর ডজনের দাম ১৬০ টাকা। রাজধানীর গলি ও কোনো কোনো বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় উঠেছে প্রতি হালি ডিমের দাম। বাজারে বিক্রি হওয়া এ দাম মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করা দামের চেয়ে বেশি। একইভাবে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগিও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। কোনো কোনো বাজারে ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির প্রতি কেজির দাম বাজারভেদে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। লেয়ারের (বড় মুরগির) কেজি বাজারভেদে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা। অথচ দাম নির্ধারণের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৮০ টাকার নিচে ছিল। দাম নির্ধারণের পর দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিন আগেও মুরগির দাম কম ছিল। গত দুই দিন ধরে মুরগির দাম বাড়ছে। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কেনায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তারা। অধিকাংশ দোকানদার জানেন না সরকারের নির্দেশনা। খিলক্ষেত বাজারের বিক্রেতা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। সোনালি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়। এ ছাড়া লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। আর সোনালি ছিলো ২৫০ থেক ২৬০ টাকায়। খিলক্ষেত বাজারের ক্রেতা শহিদুর রহমান জানান, বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম ডিমের দাম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে এসে দেখি উল্টো চিত্র। সরকারের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আজ ৫৫ টাকা হালি ডিম কিনেছি। প্রতিটি ডিম ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। অর্থাৎ প্রতিটি ডিমে ২ টাকা বেশি নিচ্ছে। সরকার দাম যেমন বেঁধে দিয়েছে, এই দাম কার্যকর করতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। শুধু দাম বেঁধে দিলে চলবে না। প্রান্তিক ডিলার খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ফিড ও বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করায় বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। করপোরেটদের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা ডিম ও মুরগির মূল্যকে বাতিল করতে হবে।