দেশজুড়ে চলছে যৌথ বাহিনীর তৎপরতা। ধরা পড়ছেন অপরাধীরা। এর মধ্যেও সিলেটে বেপরোয়া চোরাকারবারিরা। চলতি মাসে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আনা অন্তত ১০ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও যৌথ বাহিনীর অভিযানে।
ভারতীয় পণ্যের সবশেষ চালানটি ধরা পড়ে গতকাল ভোরে। এদিন সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত বাজারের কাছে ট্রাক ভর্তি ভারতীয় পণ্য জব্দ করে যৌথ বাহিনী। সেনাবাহিনীর টহল দল একটি ডিআই ট্রাক আটক করলে পুলিশ গিয়ে ভারতীয় কাপড়ের চালানটি জব্দ করে। এর মধ্যে ছিল ৬২২ পিস শাড়ি, ১৩২ পিস থ্রি-পিস, ৬৪ বান্ডেল ও ৩৭৫ গজ থানকাপড়। জব্দ কাপড়ের মূল্য কোটি টাকা হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর টহল দল ভারতীয় পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক আটক করে। পরে পুলিশ গিয়ে পণ্যগুলো জব্দ করে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। তবে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সুরমা বাইপাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩০০ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করে বিজিবি। বালুচাপা দিয়ে ট্রাকে করে চিনির বস্তাগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন চোরাকারবারিরা। উদ্ধার চিনির বাজারমূল্য ২২ লাখ টাকার ওপরে। এর আগের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর কানাইঘাটের চতুল ঈদগাহ বাজার এলাকায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি ও থ্রি-পিস জব্দ করে। এ চালানটিও ট্রাকে বালুচাপা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল চোরাকারবারিরা। ১২ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরের কালীঘাট থেকে ৮৫ বস্তা চিনি জব্দ করে পুলিশ। একটি ট্রাকে বালুচাপা দেওয়া অবস্থায় প্রায় সোয়া ৬ লাখ টাকা মূল্যের এ চিনি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। একই দিন দোয়ারাবাজার সীমান্ত থেকে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা মূল্যের সুপারি, রসুন ও মাছ জব্দ করা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর গোয়াইনঘাট সীমান্ত থেকে প্রায় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৯০ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য জব্দ করেন বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। এর মধ্যে ছিল ১৩ হাজার ৯৯৭ পিস স্কিন সান ক্রিম, ১৭ হাজার ৭৬৬ পিস চশমা, ৬৪৮ পিস ভারতীয় মুভ স্প্রে, ১ হাজার ৩৭ পিস জনসন ক্রিম, ১ হাজার ৭১০ পিস হোয়াইট টন ক্রিম, ৫০ পিস কাতান শাড়ি, ১৭৮ কেজি পোস্তদানা ও ২৪০ কেজি চা পাতা। ৯ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পীরেরবাজার এলাকায় বালুচাপা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ৩০০ বস্তা ভারতীয় চিনিভর্তি ট্রাক জব্দ করা হয়। এ সময় আটক করা হয় তিনজনকে। ৫ সেপ্টেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলার বিরাইমারা ব্রিজ সীমান্ত এলাকা থেকে ৬৭টি ভারতীয় মহিষ আটক করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ৩ সেপ্টেম্বর ছাতকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে কাভার্ড ভ্যান ভর্তি ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। এর মধ্যে ছিল বিস্কুট, ওষুধ ও মোবাইল ফোন সেট। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চোরাচালান পণ্য যাতে মহানগরের ভিতর ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। চোরাকারবারিরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলেও পুলিশ সতর্ক থাকায় পার পাওয়া কঠিন। যখনই চোরাচালানের খবর পাওয়া যাচ্ছে তাৎক্ষণিক অভিযান চালানো হচ্ছে।’