চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলগেট এলাকায় আপ্যায়ন নামে এক রেস্টুরেন্টে হামলা চালান। পরে আশপাশের আরও কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর চালিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়েন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয়রা জানান, খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় যান এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি দোকান ভাঙচুর করেন। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরও সশস্ত্র হামলা চালান ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পরে জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘যুবলীগের নেতা-কর্মীরা রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং দোকানে ভাঙচুর করেন। সকাল হওয়ার পরও পুলিশের উপস্থিতি আমরা দেখিনি। ক্যাম্পাসে আমরা অনিরাপদ। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রধান মেডিকেল অফিসার ড. আবু তৈয়ব জানান, ‘আমাদের এখানে তিন আহত শিক্ষার্থী এসেছেন। একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানবীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীরা একটি দোকানে হামলা করায় এ ঘটনা তৈরি হয়েছে। আমি স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করেছি। তাঁরা শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ নন।’ উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট রাতে রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান যুবলীগ নেতা হানিফ ও তাঁর অনুসারীরা। সে সময় দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের গাড়িতেও হামলা করেন তাঁরা। জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে রেলওয়ের জায়গা দখল করে সব দোকানের ভাড়া নেন হানিফ। এ ছাড়া তাঁর ছোট ভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় ডিশলাইন ও ওয়াইফাইয়ের ব্যবসা করেন। অভিযোগ আছে, নিম্নমানের ইন্টারনেট দিয়ে দীর্ঘদিন এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অন্য কাউকে তাঁরা এখানে ব্রডব্যান্ডের ব্যবসাও করতে দেন না।
এমনকি শিক্ষার্থীরা তাঁদের এসব সমস্যা নিয়ে মুখ খুললে হুমকিধমকি ও গুপ্ত হামলা চালায় হানিফ বাহিনী।