ডেঙ্গুজ্বরে এ বছর ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুর থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৯ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০ হাজার ৯১৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। আরও জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ৩৯২ জন। বাকি সবাই ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি। এ সময়ে মারা যাওয়া তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। ডেঙ্গুজ্বরে এ বছর ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নারী ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত কমিয়ে আনতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা দরকার। বৃষ্টি মশার প্রজননক্ষেত্র তৈরি করে। সম্ভাব্য সব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। হটস্পট ম্যানেজমেন্ট, সংক্রমণ ছড়ায়নি এমন জায়গায় মশার লার্ভা যাতে না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। এটি নিশ্চিত করা গেলে রোগী কমে আসবে।
জানা যায়, ২০০০ সালে দেশে প্রথম বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছিল। ব্যতিক্রম ছিল ২০২০ সাল। এ বছর করোনা মহামারি দেখা দেয়। দেশে ডেঙ্গু রোগী ছিল কম, সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু ছিল না। তখন জনস্বাস্থ্যবিদদের একটি অংশ এ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, একই সময়ে দুটি ভাইরাস সমান সক্রিয় থাকতে পারে না। করোনার জীবাণুর তীব্রতায় ডেঙ্গু ভাইরাস অনেকটা ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে। করোনা মহামারি শেষ না হতেই ২০২১ সাল থেকে আবার ডেঙ্গু বাড়তে থাকে। ২০২৩ সালের পুরোটাজুড়েই দেশবাসীকে ভুগিয়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়, আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।