বকেয়ার আংশিক, অর্থাৎ ১০০ মিলিয়ন ডলারের পরিশোধের আশ্বাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখল ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেড। বকেয়া ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ না করলে গতকাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছিল ভারতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটির গতকালের তথ্য অনুযায়ী আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ১১৬৮ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যানকে পাঠানো এক চিঠিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়ে আদানি পাওয়ার জানিয়েছিল, সোমবারের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে মঙ্গলবার থেকে তারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেবে। বর্তমানে দেশের মোট আমদানিকৃত বিদ্যুতের একটি বড় অংশ আসে ভারতের এই বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে। ফলে বকেয়া পরিশোধের কারণে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে দেশের জাতীয় গ্রিডে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আদানির বকেয়া বিলের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওদের সঙ্গে আমাদের কিছু আউটস্ট্যান্ডিং ইস্যু আছে। এ ছাড়া আদানির দুর্নীতির বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট হয়েছে। এগুলোকে মাথায় রেখে আমরা অন প্রোটেস্ট আংশিক বকেয়া পরিশোধ করব।’
বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে নির্মিত আদানির কয়লাভিত্তিক দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার। চুক্তি অনুযায়ী এই কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশের মতো আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে আসছে। এরই মধ্যে একাধিক দফায় অর্থ পরিশোধ বিলম্ব হওয়ায় সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। একই কারণে গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি।
গতকাল এক বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার, পিডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে ক্রমবর্ধমান বকেয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা ক্রমেই চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। স্বীকৃত ও অপ্রতিদ্বন্দ্বিত বকেয়া বিলম্ব সুদসহ এখন প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। দীর্ঘদিন ধরে অর্থ পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় কোম্পানির স্টেকহোল্ডাররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা বিদ্যমান প্ল্যান্ট পরিচালনা ক্রমশ কঠিন করে তুলছে।