৫ মে, ২০২১ ১৭:৩২

মৎস্য সম্পদের উৎপাদন ব্যাহতকারীদের কোনো ছাড় নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

মৎস্য সম্পদের উৎপাদন ব্যাহতকারীদের কোনো ছাড় নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

দেশের মৎস্য সম্পদের উৎপাদন ব্যাহতকারীদের কোনো ছাড় না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বুধবার রাজধানীর গুলশানে নৌ পুলিশ সদর দপ্তরে নৌ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এই নির্দেশ দেন। নৌ পুলিশ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির স্বার্থে যেভাবে যা করা দরকার, তা করবে সরকার। ইতিমধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ইলিশসহ অন্যান্য মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মাছের অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা, বছরে ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনা, প্রতিবছর নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করা এবং জাটকা সংরক্ষণে বিশেষ কম্বিং অপারেশনসহ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদায় কার্প জাতীয় মা মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে মনিটরিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ, কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মে-জুলাই মাসে মাছ ধরা বন্ধ করা, পোনা অবমুক্ত করা ও ৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করাসহ নানা কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে ভিজিএফ সহায়তার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এসকল পদক্ষেপের কারণে মৎস্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ সাফল্যের পথে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, একটা দেশের বড় সাফল্যের মূলে সম্মিলিত প্রচেষ্টা কাজ করে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে দেশের মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৪৫ লাখ মেট্রিক টনের ঊর্ধ্বে উপনীত হয়েছে। এ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ নৌ পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ কাজে নৌ পুলিশকে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ করা ব্যক্তি ও তাদের নেপথ্যে থাকা অবৈধ জাল উৎপাদকারী, ট্রলার মালিকসহ প্রভাবশালীদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। এ কাজ তারা সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছে।

পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে দায়িত্ব পালনের জন্য নৌ পুলিশ সদস্যদের এসময় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী এবং একইসাথে এ ভূমিকা আরো প্রসারিত করার অনুরোধ জানান তিনি। 

নৌ পুলিশের উদ্যোগে ২০২০ সালে ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পরিচালিত মৎস্য সংরক্ষণ কার্যক্রম, ১৪ অক্টোবর থেকে ০৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান, চলতি বছর মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা সংরক্ষণ অভিযান এবং হালদায় মা মাছের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করতে সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সভায় বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।

এসময় কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। নৌ পুলিশ কর্তৃক গত বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে প্রায় ৪২ কোটি ১৪ লাখ মিটার ও কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য সংরক্ষণ অভিযানে ৬ লাখ ৮৮ হাজার মিটার এবং চলতি বছর মার্চ-এপ্রিল দুই মাসে জাটকা সংরক্ষণ অভিযানে প্রায় ৪৮ কোটি ৮৮ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

নৌ পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস এম ফেরদৌস আলম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজিরা ও পুলিশ সুপাররাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর