উত্তর ইতালির বোলোনিয়া শহরে শত শত বছর আগে সমাধিস্থ এক কিশোরের ‘সবুজ মমি’ নিয়ে বহু বছরের রহস্য অবশেষে উন্মোচিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই ছেলেশিশুর দেহের অদ্ভুত সবুজ রঙের পেছনে রয়েছে তামার রাসায়নিক বিক্রিয়া।
১৯৮৭ সালে বোলোনিয়ার একটি প্রাচীন ভিলার বেজমেন্টে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী এক ছেলেশিশুর মমি পাওয়া যায়। দেহটি রাখা ছিল তামা বা তামার সংমিশ্রণে তৈরি এক বাক্সে। পরে বাক্সটির নিচের অংশ ভেঙে গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই তামার বাক্সের কারণেই ছেলেটির দেহের রঙ ধারণ করেছিল অন্যন্য সবুজ আভা।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, তামার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল (অণুজীবনাশক) গুণের কারণে ওই বাক্স দেহের নরম ও শক্ত টিস্যুকে পচন থেকে রক্ষা করেছিল। সময়ের সঙ্গে দেহ থেকে নির্গত অ্যাসিড তামার সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্ষয়জাত পদার্থ তৈরি করে। এসব পদার্থ হাড়ের রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে মিশে হাড়ের ক্যালসিয়ামকে তামার আয়নে প্রতিস্থাপন করে, ফলে হাড় শক্ত হয়ে সবুজ রঙ ধারণ করে।
রোমের টর ভারগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষণ বিজ্ঞানী আন্নামারিয়া আলাবিসো বলেন, এই আবিষ্কার আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। ভারী ধাতুর সংরক্ষণে ভূমিকা এত জটিল হতে পারে, তা আগে ধারণা ছিল না।
বিজ্ঞানীরা আরও জানান, দেহের ত্বকে হালকা সবুজ আবরণ দেখা গেছে, যা সাধারণত তামা বা ব্রোঞ্জের মূর্তির ওপর সময়ের সঙ্গে তৈরি হওয়া পাতিনা। এটি আসলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফল।
গবেষকেরা ধারণা করছেন, বাক্সটির নিচ ভেঙে কিছু তরল বেরিয়ে গিয়েছিল। দেহটি ঠান্ডা, শুকনো ও কম অক্সিজেনযুক্ত ঘরে থাকার কারণে সংরক্ষণ প্রক্রিয়াটি আরও শক্তিশালী হয়েছিল। এসব মিলেই শত শত বছর ধরে মমিটি সংরক্ষিত থেকেছে এবং এর অদ্ভুত সবুজ রঙের জন্ম দিয়েছে। এই গবেষণাটি আন্তর্জাতিক সাময়িকী জার্নাল অব কালচারাল হেরিটেজ-এ প্রকাশিত হয়েছে। সূত্র : ডেইলি মেইল
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল