শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী

আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধা, ১৯৭১

আজ ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির একটি আনন্দ ও অশ্রুমাখা দিন। আনন্দের দিন এ জন্য যে এদিন পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাংলার মাটিতে যুদ্ধে পরাভূত হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। আর দিনটি অশ্রুমাখা বলা হয় এ জন্য যে, এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য লাখ লাখ বাঙালিকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে এবং হাজার হাজার মা-বোনকে সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। এ বিজয় দিবসের মাত্র দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আলবদরের দল আরেক দফা বুদ্ধিজীবী নিধন ঘটায়। ১৯৭১ সালের এই দিনে কোটি কোটি বাঙালিকে এক হাতে চোখের অশ্রু মুছে আরেক হাতে স্বাধীনতার পতাকা উঁচিয়ে উৎসবের মিছিলে যোগ দিতে হয়েছে। ৪৫ বছর ধরে তাই এই দিনটি আমাদের আনন্দ-বিষাদের দিন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমার প্রয়াত বন্ধু এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ‘চরমপত্র’ কথিকাখ্যাত এম আর আখতার মুকুল একটি তথ্যভিত্তিক চমৎকার বই লিখেছেন, ‘আমি বিজয় দেখেছি।’ বইটির আলোচনা প্রসঙ্গে আমি লিখেছিলাম, ‘আমার বন্ধু বিজয় দেখেছেন। আমি যুদ্ধজয় দেখেছি, বিজয় দেখিনি। শত্রুরা সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত হয়ে আপাতত বিবরে লুকিয়েছে। তারা সামরিক পরাজয়বরণ করেছে, রাজনৈতিক যুদ্ধে পরাজিত হয়নি। সময় ও সুযোগমতো তারা আবার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে। নতুন মুখোশ ধারণ করবে। নতুন স্লোগান দেবে। আমাদের মিত্রদের শত্রু বলে প্রচার চালাবে। শত্রুদের মিত্র বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে। সেদিনই হবে আমাদের জয়-পরাজয়ের আসল যুদ্ধ। এই রাজনৈতিক যুদ্ধে যেদিন আমরা জয়লাভ করব, সেদিন হবে আমাদের যথার্থ বিজয়লাভ। বলতে পারব, আমরা বিজয় দেখেছি।’

আমার আলোচনাটি পাঠ করে বন্ধু এম আর আখতার মুকুল সেদিন আগের কথাগুলোকে ভুল অর্থে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন, আমি তার ‘বিজয় দেখেছি’ কথাটিকে বুঝি অসত্য প্রমাণ করার চেষ্টা করছি। এ জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি একটি প্রতিবাদও লিখেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। আজ যদি তিনি বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনিও হয়তো পরম পরিতাপের সঙ্গে উপলব্ধি করতেন একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বরের জয় রণক্ষেত্রে আমাদের জয়; তা রাজনৈতিক জয় নয়। আমাদের জাতীয় বিপ্লবও অসমাপ্ত থেকে গেছে। এ জন্যই মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলুজ একে বলেছেন, আনফিনিশড রেভ্যুলেশন বা অসমাপ্ত বিপ্লব।

বিপ্লব যে অসমাপ্ত রয়ে গেছে, আমরা যে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করিনি, এটা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও বুঝতে পেরেছিলেন। তাই স্বাধীনতা অর্জনের তিন বছর পূর্তি না হতেই তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্বল্প সময়ের মধ্যে গণশত্রুরা ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে। পাল্টা আঘাতের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যযুগীয় মৌলবাদী শক্তি। এই দ্বিতীয় বিপ্লবের রণক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধু তার চার বিশিষ্ট সহকর্মী, যুবনেতা ও পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তারা যদি বেঁচে থাকতে পারতেন, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব যদি সফল হতো, তাহলে বাংলাদেশের অসমাপ্ত জাতীয় বিপ্লব সমাপ্ত হতো। আমরা প্রকৃত এবং চূড়ান্ত বিজয়ের অধিকারী হতাম। আমাদের স্বাধীনতার শত্রুশিবির এখন যতই রটাক, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় মুক্তি ও জাতীয় বিপ্লব সমাপ্ত হলে বাংলাদেশের চেহারা আজ অন্য রকম ধারণ করত।

আমাদের জাতীয় বিপ্লবের, জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের অধিনায়ক বঙ্গবন্ধুসহ তার বিশ্বস্ত সহকর্মী অধিকাংশ জাতীয় নেতা শহীদ হয়েছেন। কিন্তু জাতীয় মুক্তির এই সংগ্রামের নিরন্তর প্রবাহিত ধারাটিকে স্বাধীনতা এবং বাঙালির সেক্যুলার অস্তিত্বের শত্রুপক্ষ ধ্বংস করতে পারেনি। তারা একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে, স্বাধীনতার মূল স্তম্ভগুলোকে ভেঙে ফেলে আবার বাংলাদেশকে একটি ‘তালেবাস্তান’ তৈরির চেষ্টা করেছিল। তারা সামরিক সাফল্যও অর্জন করেছিল। কিন্তু পরিণামে তাদের পিছু হটতে হয়েছে। বাংলার স্বাধীনতার আদর্শের সৈনিকরা অনেক ভুল-ত্রুটি, পতন অভ্যুদয়, জয়-পরাজয়ের মধ্য দিয়ে, শত্রুপক্ষের দ্বারা তৈরি ভয়াবহ কিলিং ফিল্ড অতিক্রম করে এখনো এগিয়ে চলেছে, অসমাপ্ত বিপ্লব সমাপ্ত করার লক্ষ্যে চূড়ান্ত বিজয় লাভের দিবসটির দিকে। আমার সন্দেহ নেই, রাক্ষসপুরী ধ্বংসের লক্ষ্যে গণযুবরাজের এই অভিযানের জয় হবেই।

বঙ্গবন্ধু তাই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব; এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’ এই উক্তিই বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শিবিরের বর্তমানের অব্যাহত সংগ্রামের মূলমন্ত্র। রক্ত কেবল একাত্তর আর পঁচাত্তর সালেই ঝরেনি, এখনো ঝরছে। বঙ্গবন্ধু ও শহীদ জাতীয় নেতা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের ধারায় কি মিশে যায়নি শাহ মোহাম্মদ কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার, আইভি রহমান, হুমায়ুন আজাদের মতো অসংখ্য রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র-যুবনেতা ও শ্রমিক নেতার রক্ত?

রমনার বটমূলে, যশোরে উদীচী সম্মেলনে, ফরিদপুরের গ্রামের গির্জায়, সিলেটের মাজারে মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের হামলায় যারা প্রাণ দিয়েছেন, ২৪ আগস্টের বর্বর গ্রেনেড হামলায় যারা আহত-নিহত হয়েছেন, তারা কি একই সংগ্রামের ধারাবাহিকতার শহীদ ও বীর নন? আজকের দিনেও ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের চেষ্টা প্রত্যক্ষ করছি আমরা। মুক্তচিন্তার লেখক-প্রকাশকদের ওপর হামলা হচ্ছে। হামলা হচ্ছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর।  ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পরিচয় মুছে ফেলার অপচেষ্টা এখানো চলছে। কাজেই বলতে হবে, আমাদের সংগ্রাম চলছে এবং চলবে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ছিল সেই সংগ্রামে জয়ী হওয়ার প্রাথমিক ধাপ মাত্র। চূড়ান্ত বিজয় নয়। তাকে চূড়ান্ত বিজয় ভাবতে গিয়েই আমরা ভুল করেছি। শত্রু নিপাত হয়ে গেছে ভেবে আমরা আত্মসন্তোষ ও আত্মপ্রসাদে ভুগেছি, অসতর্ক হয়েছি। সেই আত্মসন্তোষ ও অসতর্কতার সুযোগেই দেশি-বিদেশি শত্রুপক্ষ একাট্টা হয়ে আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক মানুষকে একাট্টা হয়েই সে আঘাতের মোকাবিলা করতে হবে। যারা এই সংগ্রামে ‘নিরপেক্ষ’ থাকতে চাইবেন, নির্বিরোধ থাকতে চাইবেন, তাদের জন্য কবির একটি সতর্কবাণী উচ্চারণই আজ যথেষ্ট :

‘থাকতে কি চাও নির্বিরোধ?

রক্তেই হবে সে ঋণ শোধ।’

৪৫ বছর ধরে আমরা বিজয় দিবস পালন করে আসছি। বিএনপি-জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারাও এ দিবসটি পালন করেছে। স্বাধীনতা দিবসও তারা পালন করে। জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেয়ে চমৎকার পন্থা আর কিছু নেই। বিএনপি এখন সম্পূর্ণভাবে জামায়াত-আশ্রিত। ১৯৭১ সালে এ জামায়াতই ছিল হানাদারদের গণহত্যার দোসর এবং রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী তারাই গঠন করেছিল। বিএনপি থেকেও অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা এখন বিতাড়িত। ফলে চমৎকার মতের মিল ও পথের মিল হয়েছে তাদের মধ্যে। এখন তারা স্বাধীনতার মিত্রের মুখোশ ধারণ করেছে, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তাদের দ্বিধাবিভক্ত করে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার একদল লোককে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘বহবসু রিঃযরহ’ বা ঘরের ভিতরে ঢোকা শত্রু। তিনি বলতেন, তিনি বাইরের শত্রুদের চেয়ে ঘরের ভিতরের শত্রুকেই বেশি ভয় করেন। বাংলাদেশেও জামায়াতি তথা একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের ভয় করার কিছু ছিল না। জাতির কাছে তারা পরিচিত, চিহ্নিত ও ঘৃণিত। কিন্তু এখন তারা একদিকে ইসলামের লেবাসধারী এবং অন্যদিকে বিএনপির অভিন্ন-হৃদয় বন্ধু। তারেক রহমানের ভাষায়— ‘জামায়াতিরা এবং আমরা একই পরিবারের লোক।’

বিএনপি মুখে নিজেদের স্বাধীনতার দল বলে দাবি করে, তাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ বলে প্রচার চালায়। কিন্তু তাদের সব কর্মকাণ্ড স্বাধীনতা যুদ্ধের সব আদর্শের বিরোধী। রাজনৈতিক দল হিসেবে বর্তমান আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা নেতৃত্বেরও বিরোধিতা করলে কারও আপত্তি করার কিছু ছিল না। বরং গণতান্ত্রিক ও বহুদলীয় সংসদীয় রাজনীতিতে সেটাই ছিল সবার কাম্য। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বিএনপির মূল রাজনীতি হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিরোধিতার নামে স্বাধীনতা যুদ্ধের সব আদর্শ এবং তার জাতীয় নেতৃত্বকে অস্বীকার এবং তা ধ্বংস করার চেষ্টা।

তারা মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা এবং জাতির জনক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে না। বরং তার নাম মুছে ফেলা এবং তার স্মৃতিকে অসম্মান করার এমন কোনো চক্রান্ত নেই, যা এতকাল তারা করেনি এবং এখনো করছে না। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডেই নয়, চার জাতীয় নেতার হত্যাকাণ্ডে এই দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে এখন প্রকাশ্যেই অভিযোগ উঠেছে। কর্নেল তাহেরসহ মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার সূচনা ঘটান এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জেনারেলই। তিনি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে পাকিস্তানি পাসপোর্টসহ বাংলাদেশে ফিরে আসতে দেন। জামায়াত ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধী সাম্প্রদায়িক দলগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং তাদের ক্ষমতায় বসার সুযোগ করে দেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের উচ্চ সরকারি পদে চাকরি দেন এবং তার স্ত্রী বঙ্গবন্ধুর নিষ্ঠুর হত্যা দিবসকে নিজের জন্মদিন বলে পরবর্তী সময় ঘোষণা দেন।

এখানেই শেষ নয়। জিয়াউর রহমান বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখলের পর দেশের সংবিধান থেকে স্বাধীনতার আদর্শগুলো (সমাজতন্ত্র ও সেক্যুলারিজম) মুছে ফেলেন। তাতে ধর্মের যোগ ঘটান। দীর্ঘ সংগ্রামের পর বাংলাদেশের মানুষ বাঙালি নামের যে পরিচয় উদ্ধার করেছিল, তা মুছে ফেলে পাকিস্তানি কায়দায় বাংলাদেশি নামে অপজাতীয়তা (নাগরিক পরিচয় নয়) তৈরির চেষ্টা চালান। বাংলাদেশের জাতীয়সংগীত পরিবর্তনের চেষ্টা তিনি চালিয়েছিলেন। আকস্মিকভাবে নিহত না হলে তিনি তাও করে যেতেন। তিনি বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে পাকিস্তানের অনুকরণে রেডিও বাংলাদেশ করেছিলেন। পাকিস্তানের অনুকরণে জয় বাংলা স্লোগান বাতিল করে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগান প্রবর্তন করেন। তালিকা বড় করার প্রয়োজন নেই। এককথায় স্বাধীনতা যুদ্ধের সব আদর্শ ধ্বংস করে তিনি বাংলাদেশকে নামে না হলেও কার্যত পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করে গেছেন। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া সেই অপরাজনীতির কালো পতাকা বহন করেই এখন পর্যন্ত রাজনীতি করে যাচ্ছেন।

এ জন্যই এই আলোচনার সূচনাতেই লিখেছি, একটি দিবসকে বিজয় দিবস বলা আর সেই দিবসের লক্ষ্য অর্জন করতে পারা এক কথা নয়। বিজয় দিবসের লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোতে আমাদের সামনে দুস্তর বাধা। এ বাধা অতিক্রম করতে না পারলে বিজয় দিবস বহুকালই আমাদের কাছে বিজয় দিবসের মিথ হয়ে থাকবে, রিয়েলিটি হয়ে উঠবে না। বাংলাদেশের অসমাপ্ত বিপ্লবকে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে এগোতে বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের মধ্যেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব, পদস্খলন, পশ্চাত্পসরণ, আপসবাদিতা লক্ষণীয়। দলটি এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধকে সমাপ্ত করার লক্ষ্যের সংগ্রামে আওয়ামী লীগ দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শিবিরের নেতৃত্বে থাকতে পারবে কিনা সেই প্রশ্নও উঠবে।

দেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি বহু পুরনো এবং আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দেশে-বিদেশে অপশক্তির বিরাট চক্রান্ত ও প্রচারণার বাধা এড়িয়ে চার যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার যদি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের মতো এ বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে পারে, তাহলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আদর্শবিরোধী সবচেয়ে বড় ঘাঁটিটিই শুধু ধ্বংস হবে না, আমরা প্রকৃত বিজয় অর্জনের দিকেও অনেক বেশি এগিয়ে যাব। বাংলাদেশের মানুষ সেদিন সগর্বে বলতে পারবে, ‘হ্যাঁ, আমরা বিজয় দিবস দেখেছি।’

 

লেখক : লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলাম লেখক।

সর্বশেষ খবর