বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

সামনে ঈদ :এটিএম বুথ নিয়ে গ্রাহকের উদ্বেগ

সামনে ঈদ :এটিএম বুথ নিয়ে গ্রাহকের উদ্বেগ

সামনে ঈদ। ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকবে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ওই সময় টাকার প্রয়োজনে এটিএম বুথ-ই গ্রাহকের ভরসা। তবে ব্যাংকিং সেবার এই মাধ্যমটি নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না। গ্রাহকরা জানতে চাইছেন, ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে টাকা থাকবে তো। এর আগে এ ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার কারণেই গ্রাহকদের মধ্যে এ ধরনের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, ঈদের ছুটিতে তিন দিন বন্ধ থাকবে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ওই সময় টাকার দরকার হতে পারে। তখন এটিএম বুথে গিয়ে টাকা না পেলে বিড়ম্বনার শেষ থাকবে না। গত কয়েকদিন ধরে এটিএম কার্ড গ্রাহকদের বিড়ম্বনা পিছু ছাড়ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নির্দেশনার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ঈদের বাড়তি চাপে নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। ব্যাংকের দীর্ঘ লাইন এড়াতে এটিএম কার্ড দিয়ে লেনদেন করছেন অথবা ঈদের কেনাকাটা করতে গিয়েও কার্ড ব্যবহারে হয়রানির শিকার হচ্ছেন এমন গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছেই। ঢাকা শহরের বেশির ভাগ এটিএম বুথে গিয়ে গ্রাহকরা টাকা না থাকা, বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্কসমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বুথের নিরাপত্তা ও পরিবেশ নিয়েও অনেক গ্রাহকের অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা উত্তোলন করা যাচ্ছে না বলে অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন। প্রতিবছরের তুলনায় চলতি বছর এটিএম সেবার মান কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ঈদের চাপের কারণে নেটওয়ার্ক সমস্যা মারাত্দক আকার নিয়েছে। অ্যাকাউন্টে টাকা রেখে এটিএম কার্ড নিয়ে বুথে গিয়ে দেখছেন ব্যালেন্স নেই। কেউ কেউ টাকা তুলতে গিয়ে বড় ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ছেন। ভিন্ন ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে গেলে লেনদেন সম্পূর্ণ দেখায় কিন্তু টাকা আসে না। রাজধানীর মতিঝিলে তৃতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংকের একাধিক এটিএম বুথে দুপুর ১২টায় গিয়ে দেখা গেছে কোনো নেটওয়ার্ক নেই। সামনে দাঁড়ানো কয়েকজন গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঈদে ভিড় থাকবে। সেটা চিন্তা করে ব্যাংকগুলো কেন ব্যবস্থা নেয় না। ঈদের শপিং করতে গিয়েও গ্রাহকরা নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়ছেন। অনেকে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে পণ্যে মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে নেটওয়ার্ক ব্যস্ত দেখাচ্ছে বেশির ভাগ ব্যাংকের কার্ডই। এসব সমস্যার পাশাপাশি আরও একটি বড় সমস্যা হলো জাল টাকা। অনেক সময় এটিএম বুথে কার্ড পাঞ্চ করার পর যে টাকা বেরিয়ে আসে সেখানে জাল নোট পাওয়া যায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণের কারণে চলতি বছর এটিএম বুথ সংশ্লিষ্ট তেমন কোনো অভিযোগ আসেনি। এ ছাড়া এবারই প্রথম এটিএম বুথে জাল টাকা থাকারও কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই মুখপাত্র আরও বলেন, এটিএম কার্ডসহ বিভিন্ন কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহক যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য ব্যাংকগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসন্ন ঈদের ছুটিতে সবগুলো ব্যাংকের এটিএম বুথ খোলা থাকবে। এজন্য বুথগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কারণে কোনো বুথ সেবা দিতে না পারলে তা নোটিস দিয়ে গ্রাহকদের অবহিত করতেও বলা হয়েছে।

ব্যাংকগুলোকে চিঠি : আসন্ন ঈদে গ্রাহকের বাড়তি চাপ ঠেকাতে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ছুটির সময় ব্যাংক সমূহের এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা এটিএম বুথ খোলা রাখার জন্য ব্যাংকগুলো ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া ছুটির সময় কোনো কারণে এটিএম বুথ বন্ধ থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের তা জানাতেও বলা হয়েছে। বন্ধ ও নষ্ট বুথ অপসারণ করা এবং ব্যাংকিং লেনদেনে গ্রাহকদের হয়রানি না করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর