বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
আজ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর

বিনিয়োগ বাড়ানোই লক্ষ্য

বিনিয়োগ বাড়ানোই লক্ষ্য

বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আজ ঘোষণা করা হবে মুদ্রানীতি। শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ থাকছে চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধের নতুন মুদ্রানীতিতে। স্থানীয় ছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি আলাদা তহবিল গঠন করছে। এ তহবিল থেকে সরাসরি বিদেশি মুদ্রায় ঋণ দেবে ব্যাংক। এ ছাড়াও এসএমই খাতের উন্নয়নে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। এ বছরই প্রথম এই তহবিল থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ঋণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মধ্যম আয়ের দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে মুদ্রানীতির পদক্ষেপ থাকবে। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ছাড়া কোনো উপায় নেই। এ কারণে উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক মুদ্রানীতিই প্রাধান্য পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চলতি অর্থবছরে প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ষাণ্মাসিক মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি, বেসরকারি ঋণ প্রবাহ, ব্যাপক মুদ্রার জোগান স্বাভাবিক রেখে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শ্রেণিকৃত ঋণে বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছে। কিছু বৃহৎ ঋণের ক্ষেত্রে সময় সময় সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহজীকরণে করে দিয়েছে। তবে আগামী মুদ্রানীতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য শিল্প বিনিয়োগ বাড়াতে দুটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হবে। এই তহবিল গঠন করতে এ বছরই প্রথম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সবুজ শিল্পায়নে ২০০ মিলিয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের দুটি তহবিল গঠন করা হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য গঠিত তহবিল থেকে ডলারের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগে আগ্রহী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে কম সুদে ঋণ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এ জন্য বিনিয়োগ বোর্ডের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিনিয়োগ বোর্ডে নিবন্ধনের পর উদ্যোক্তাকে সব ধরনের সহায়তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে সহজীকরণ করাসহ ঋণ পেতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ পর্যবেক্ষণ করবে।

সূত্রে জানা গেছে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি দেশের সবচেয়ে বড় বাধা বলে চিহ্নিত জ্বালানি সংকট কাটাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে জুলাই-ডিসেম্বর মুদ্রানীতিতে। পরিবেশ বান্ধব কারখানা পরিচালনার জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলারের বিশেষ তহবিল থেকে ঋণ দেওয়া হবে। এই ঋণ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নিজেদের কারখানা পরিচালনা করতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া এই প্রথম এসএমই খাত উন্নয়নে বড় ধরনের পরিকল্পণা গ্রহণ করা হয়েছে। এসএমই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে মুদ্রানীতিতে দিক নির্দেশনা থাকছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বলেন, সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। আগামী সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে উদ্যোক্তা সহায়ক মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হবে। প্রবৃদ্ধির হার আরও বাড়াতেই এই মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য থাকবে। মুদ্রানীতির লক্ষ্য হবে টেকসই উন্নয়নে টেকসই অর্থায়ন। এ জন্য আমরা গুরুত্ব দেব দীর্ঘমেয়াদি ও মধ্য মেয়াদি অর্থায়নে।

 

সর্বশেষ খবর