বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ওঠানামার ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ওঠানামার ঢল

ডলার সংকটের দুশ্চিন্তা কমাচ্ছে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়। তবে রেমিট্যান্স প্রবাহের ধীরগতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বিরাজ করছে ওঠানামার ঢল। ডলারের দাম হুহু করে বাড়লেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা এখনো মজবুত রয়েছে বলে মনে করে সরকার। কেননা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে কিছুটা ছন্দপতনের পর আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ২৯ জুন পর্যন্ত প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার (৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। যা দিয়ে অন্তত ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আর এক মাসে আগে ৩১ মে ২০২২ পর্যন্ত রিজার্ভ ছিল ৪২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

অবশ্য গত বছরের একই সময়ে এটা ৪৬ বিলিয়ন ডালারেরও বেশি। সাম্পপ্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতি ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে। যার ফলে জ্বালানিসহ প্রায় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বিশ্ববাজারে। এতে পৃথিবীর সব দেশেরই আমদানি ব্যয় বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সে তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। সিঙ্গাপুর সফররত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মুঠোফোনে জানিয়েছেন আমাদের অর্থনীতি এখনো বেশ মবজুত। প্রবাসী আয়ে গতি ফিরে আসায় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীরাই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান হাতিয়ার। একই সঙ্গে রপ্তানি খাত সংশ্লিষ্টরা এক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখছেন বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছরের ২৪ আগস্টে এই রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল। তখন ওই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। যদিও তখন আমদানি ব্যয় ছিল কম। সে সময় প্রতি মাসে ৪ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো। আর চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ; এই তিন মাসের প্রতি মাসেই ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে দেশে। এটা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনা মহামারির প্রভাব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে গেলে বৈশ্বিক বাজারে স্থিতিশীলতা নেমে আসবে যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও এক ধরনের স্বস্তি আনবে বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম তিন বা চার মাসে আমদানি পণ্যের পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি। কিন্তু আমদানি ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ও বেড়েছে। এতে রিজার্ভ কমছে।  আবার রপ্তানি আয় কিংবা রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি এলে রিজার্ভ কিছুটা বাড়ছে।  যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ওঠানামা করছে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সর্বশেষ খবর