মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

আমির হোসেন আমু

সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ন্যাপের অফিসে এক বৈঠকে আমাদের কাছে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বললেন, শেখ মুজিব পাকিস্তান হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন না। প্রথম যখন গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠিত হয়, সে সভায় প্রথম বলেছিলেন, যারা পাকিস্তানে বিশ্বাসী হবে না, তাদের নিয়েই কমিটি গঠন করা হবে এবং সেভাবে আন্দোলন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা যখন কারাগারে তখন জেলে বসেই বিভিন্ন দিবস পালন করতাম। আলোচনা সভা করতাম। সেই আলোচনা সভায় এক দিন কমরেড মণি সিংহ বলেছিলেন, শেখ মুজিব কোনো দিনও পাকিস্তানে বিশ্বাস করত না। আমাকে বলত, দাদা, আপনারা কোনো দিন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না। আমাকে সাহায্য করেন। আমি দেশ স্বাধীন করে আপনাদের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। অনেকে মনে করেন বঙ্গবন্ধু ছয় দফার মাধ্যমে স্বাধীনতার চিন্তা করেছেন। না। ১৯৬১ সালে আমাকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এবার যে আন্দোলনের সূচনা করব, এটাই হবে আমাদের মূল আন্দোলন। এ জন্য তৈরি থেকো। ১৯৬১ সালের শেষের দিকে শেখ মণি আমাদের চিঠি লিখে ঢাকায় নিলেন। আমাদের ডেকে নিয়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বরিশালে ছাত্র ইউনিয়নের বিরোধ মিটিয়ে দিলেন।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেব গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের দাবিতে প্রেস কনফারেন্স করবেন। এ প্রেস কনফারেন্সের সঙ্গে সঙ্গে গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনের সূচনা হবে। তিনি জানালেন, সোহরাওয়ার্দী সাহেব গ্রেফতার হবেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মুক্তি ও গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে।

আমরা যখন ছাত্রলীগের বিভিন্ন সম্মেলন করতাম তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল- ছাত্রলীগের সম্মেলন এবং জনসভায় লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে শাসনতন্ত্রের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরা। লাহোর প্রস্তাবে এই দেশ স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ছিল ১৯৪০ সালে। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দেওয়ার আগে যখন পাক-ভারত যুদ্ধ, সেই যুদ্ধের মধ্যে ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ হলো। মোজাহারুল হক বাকি সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাককে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। নতুন কমিটির সদস্যদের নিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাব। আমরা যখন ওখানে মিলিত হতে গেলাম, তখন এনএসএফ এবং রনো গ্রুপ অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছিল। পারে তো মারে। আমাদের বলল ভারতের দালাল। যুদ্ধের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো ভূমিকা নেই, ইত্তেফাকের কোনো ভূমিকা নেই ইত্যাদি। আমরা বঙ্গবন্ধুর অফিসে গেলাম। তাকে বললাম। বঙ্গবন্ধু অট্টহাসি দিয়ে বললেন, যুদ্ধের পর এমন জিনিস দেব, তোমরা ফুলের মালা পাবা। ওরা থাকবে না। তখন আমরা বললাম, এই কয়দিন তো আমাদের থাকতে হবে। মিছিল-মিটিংয়ে যেতে হবে। ছাত্রলীগ করতে হবে। একটা কিছু বলেন। তখন বঙ্গবন্ধু অনেক বাকবিতন্ডা করার পর বললেন, আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি একজন পাকিস্তানি আওয়ামী লীগ বানিয়েছি। তাকে দিয়ে একটা স্টেটমেন্ট দেব। এই কথা বলে বঙ্গবন্ধু শাহ আজিজ সাহেবকে টেলিফোন করলেন। তিনি তখন অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কেন্দ্রীয় উপনেতা। তাকে বঙ্গবন্ধু বললেন, তুমি একটা স্টেটমেন্ট দাও। তিনি স্টেটমেন্ট দিলেন। তারপর বললাম ইত্তেফাকের ভূমিকা প্রসঙ্গে। বঙ্গবন্ধু বললেন, মানিক ভাই জানে, তাঁর কাছে যাও। আমরা তাঁর কাছে গেলাম। মানিক ভাই বললেন, আমি কিছু জানি না; মুজিবুর মিয়া আমার পত্রিকা চালান। তিনি যেভাবে বলেছেন, আমি সেভাবে চালাচ্ছি। তিনি না বলা পর্যন্ত আমি একটা লাইনও লিখতে পারব না। অনেক আলোচনার পর মানিক ভাইকে বাধ্য করলাম বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতে। তিনি টেলিফোন করলেন। মানিক ভাই বললেন, যাও। আমরা চলে এলাম। পরদিন দেখলাম বাঁ পাশে ছোট্ট একটা নিউজ করলেন। এই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি।

আমরা যে বিষয়টা চিন্তা করি না। সেটা হলো- আওয়ামী লীগ হলো একটা সংগঠন। এটা তো জামায়াতে ইসলামী বা কমিউনিস্ট পার্টির মতো সংগঠন না। ধারেকাছেও না। প্রথম কথা হলো, বাংলাদেশের মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বহুস্তরের। এটাই বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ তো মাল্টিক্লাস পিপলের অর্গানাইজেশন। এর নেতৃত্বে ছিল একটি নিম্নশ্রেণি, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোক। সেই ধরনের সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে, মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা কোনো ইতিহাসে আছে? এটা কি সম্ভব? এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল সুপরিকল্পিত। তিনি বলতেন, প্রগতি মানে হটকারিতা নয়। প্রগতি মানে সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাওয়া। মওলানা ভাসানী আসসালামু আলাইকুম বলেছিলেন। কিন্তু মানুষ সাড়া দেয়নি। বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা দিয়ে একক নেতৃত্ব দেন, তখন কিন্তু মওলানা ভাসানী, আতাউর রহমান খানরা জীবিত। তখনই বঙ্গবন্ধু একক নেতা হিসেবে মার্চ করেছেন। এটা তাঁর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি। 

আরেকটা জিনিস লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগ মানেই শেখ মুজিব। এটা অবিশ্বাসের কোনো কারণ নেই। কারণ, নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ছিল সোহরাওয়ার্দী সাহেবের নেতৃত্বে। পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল না। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে দল, তার শক্তি, ভিত্তি, সব কিছু ছিল পূর্ববাংলাকেন্দ্রিক। পূর্ববাংলাকেন্দ্রিক সেই শক্তির মূল উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু। সোহরাওয়ার্দী সাহেব যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন, সেই মন্ত্রিসভায় কিন্তু বঙ্গবন্ধু গেলেন না। তিনি কিন্তু সেই মন্ত্রিসভায় শপথ নেননি। এটা আমাদের বুঝতে হবে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কাদা গায়ে লাগাননি। তিনি ছাত্রলীগ সংগঠন দাঁড় করিয়েছেন। সেই ছাত্রলীগকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন পূর্ববাংলার ভিতরে। পাকিস্তানব্যাপী সেই সংগঠন দাঁড় করানোর চেষ্টা করেননি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিটা অত্যন্ত হিসাবের। প্রত্যেকটা পদক্ষেপ হিসাবের।

আওয়ামী লীগের কিন্তু কোনো শ্রমিক সংগঠন ছিল না, ১৯৭২ সালের আগ পর্যন্ত। অথচ সেই শ্রমিকরা কীভাবে এলো। তখনকার শ্রমিক সংগঠনগুলো ছিল আরএসপি। এর মূল নেতা ছিল নেপাল নাগ। এই নেপাল নাগের সঙ্গে জেলখানায় বসে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক হয়। চুক্তি হয় যে তার শ্রমিক সংগঠন এই ছয় দফায় সম্পূর্ণ সমর্থন দেবে। এবং তার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ছয় দফা দেওয়ার এক বছর আগে জুট আন্দোলন হয়েছিল। পাট শ্রমিকদের সংগ্রাম পরিষদের নেতারা পরবর্তীতে শ্রমিক লীগের নেতা হন। এম এ মান্নান, আবদুর রহমানরা- এরা সবাই। টঙ্গীতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। টঙ্গীতে কালা মান্নান ছিলেন। সব ছিল আরএসপির লোক। তখন জুট শ্রমিকদের এই আন্দোলনের মাধ্যমে শ্রমিকদের নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুর কাছে হস্তান্তর করা হয়। মান্নান বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পাট আন্দোলন করেছিলেন।

পরবর্তীকালে যখন ছয় দফা দেওয়া হলো, আইয়ুব খান একদিকে অস্ত্রের ভাষায় হুমকি দিলেন মোকাবিলা করার। আরেকদিকে আমাদের দেশে কতিপয় বামপন্থি বললেন, ছয় দফা সিআইএর দলিল। এখানে শ্রমিক-কৃষকের কথা নেই। অথচ শ্রমিকরা প্রথমে রক্ত দিল। মনু মিয়ারা রক্ত দিলেন এই ছয় দফার জন্য। বঙ্গবন্ধু যে ছয় দফা দিলেন, তা মানা পাকিস্তানিদের পক্ষে সম্ভব নয়। ছয় দফা মানলে যে, ছয় মাসের মধ্যে একটা আলাদা দেশ হবে। এটা তো বঙ্গবন্ধু বুঝে-শুনেই দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর এই রাজনৈতিক পদক্ষেপগুলো ছিল যেন বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে আখ্যায়িত করতে না পারে।   

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। সেখানেও তিনি অনেক কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। ২৫ মার্চ আবার সংসদ ডাকা হয়েছে। তখন বঙ্গবন্ধু বললেন, সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে। সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে। যেভাবে আজ পর্যন্ত গণহত্যা করা হয়েছে, তার তদন্ত করতে হবে। বিচার করতে হবে এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারপরই বিবেচনা করব- সংসদে যেতে পারব কিনা। বঙ্গবন্ধু কিন্তু আলাদা প্রস্তাব দিলেন। এই ছিল বঙ্গবন্ধুর কৌশল। 

সেই কৌশলের ভিত্তিতেই বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে জনগণকে সশস্ত্র আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছেন। ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ ছিল অসহযোগ আন্দোলন। আর ২৫ মার্চ একটা কথার ওপরে অসহযোগরত জাতি সশস্ত্র আন্দোলনে রূপান্তিরত হলো। আমরা যখন কলকাতা বা বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করি, তখন অনেক বড় বড় সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বড় বড় সিপিএম নেতা, যারা একদিন এ দেশে ছিলেন, তারা বলছেন, আমাদের দুই নেতার চেয়ে বড় তোমাদের নেতা। মহাত্মা গান্ধীকে বলা হয় অসহযোগ আন্দোলনের স্রষ্টা। কিন্তু তাঁর অসহযোগ আন্দোলন সফল ছিল না। এটা বাস্তব। নেতাজী সুভাষ বসু রক্ত চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলন, একদম প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে হাই কোর্ট পর্যন্ত সফল হয়েছে। টিক্কা খানের শপথ অনুষ্ঠানে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অংশগ্রহণ করেননি। এটা ছিল সেই দিন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের ফসল।

বঙ্গবন্ধু ভাষণে বললেন, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব; এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। সেই রক্ত দেওয়ার কথা বঙ্গবন্ধু জানতেন। কারণ, কথা ছিল ৭ মার্চের সভাতেই বোমাবর্ষণ করা হবে। সকাল থেকে হেলিকপ্টার ঘুরছিল। অনেক ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল। তারপরও বঙ্গবন্ধু এলেন। বক্তব্য দিলেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন, হয় তাকে গ্রেফতার করা হবে। অথবা বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলা হবে। তাই বঙ্গবন্ধু বললেন, আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা কর। সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল। সব কিছু বঙ্গবন্ধু বলে গেলেন।

এই ভাষণ তিন ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রথম অংশে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের ২৩ বছরের দুঃশাসন-নির্যাতন তুলে ধরলেন।

দ্বিতীয় অংশ ছিল- ১ মার্চ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত যে হত্যা-নির্যাতন, আন্দোলন দমানোর চিত্র। তৃতীয় অংশে করণীয় সম্পর্কে বললেন বঙ্গবন্ধু। তিনি গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করার আহ্বান ও রূপরেখা দিলেন। এবং আজকে যেটা বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাঁর সুযোগ্যকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা বাস্তবায়নের পথে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর শুধু ২১ বছর নয়। পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার ১০ বছর, অন্যান্য সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে সবকিছু গুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। যে কারণে আজকে গ্রামে কোনো অভাব নেই। আজকে দারিদ্র্যবিমোচনে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সরকারের পক্ষ থেকে ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে জিনিসগুলো চেয়েছিলেন। সেগুলো শেখ হাসিনার সরকার ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করছে।

আজকে শেখ হাসিনা সেখান থেকে উত্থানটা তো করলেন। আজকে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার- এই সাহসী পদক্ষেপগুলো নিলেন। প্রতিটি মুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছেন শেখ হাসিনা। আমরা অনেকে অনেক সময় টকশোয় অনেক কথা বলতে পারি। কিন্তু তাঁর জীবনটা নিয়ে কি কেউ একবার চিন্তা করেছেন। তিনি কী অবস্থায় দেশে ফিরেছিলেন। একজন মানুষ দেখে গেলেন তাঁর বাবা রাষ্ট্রপতি। মা তাঁর ঘরসংসার ও পরিবার সামলাচ্ছেন। তারপর তিনি এলেন, কিছু নেই। স্বামী-পুত্র-কন্যা রেখে আসতে হলো। দেশে আসার পর মৃত্যুপথযাত্রী। প্রতিটা মুহূর্তে তাঁর জীবননাশের হুমকি। এমন একটি অবস্থায় দেশে যে রাজনীতি বিরাজমান, সেই অবস্থায় রাজনীতি করে শেখ হাসিনা একটি দলকে ক্ষমতায় এনেছেন। আজকে সেই দলের মাধ্যমে দেশকে তিনি এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। এটা কি আমরা একবার চিন্তা করেছি। কোথা থেকে তিনি দেশকে কোথায় নিয়ে এসেছেন। তাঁর মানসিক অবস্থা কী ছিল। তিনি জাতির হাল ধরেছেন। বাস্তবতা কিন্তু অনেক কঠিন। বাস্তবতা যদি আমরা স্বীকার করি, একটা শব্দ করার মতো কোনো ভাষা নেই। শেখ হাসিনাকে দেওয়ার মতো কিছু নেই। তিনি দেশকে দিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর পথ থেকে সরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাঁর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার মাধ্যমে জাতিকে একটি সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে।  শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কোন  পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, তা বিশ্ব উপলব্ধি করছে।

 

লেখক : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী।

শ্রুতিলিখন : রুহুল আমিন রাসেল

সর্বশেষ খবর