১১ নভেম্বর, ২০১৯ ২১:০১

১৫ চিনিকল মেয়াদ উত্তীর্ণ, কাঁচামালের অভাবে বন্ধ থাকে ৬ মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ চিনিকল মেয়াদ উত্তীর্ণ, কাঁচামালের অভাবে বন্ধ থাকে ৬ মাস

ফাইল ছবি

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, চিনি ও খাদ্য কর্পোরেশনের আওতাধীন ১৫টি চিনিকলের কোনটাই বন্ধ নাই। তবে এসব চিনিকলের মধ্যে অধিকাংশেরই অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। তাই এসব কলগুলো পর্যায়ক্রমে সুষমকরণ, আধুনিকীকরণ ও প্রতিস্থাপণ (বিএমআর) প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং লি. প্রকল্পটি বাস্তবায়াধীন। 

স্পিকার ড. শিরীর শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে আজ বৈঠকে শফিকুল ইসলাম শিমূলের (নাটোর-২) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।  

‘র’ সুগার আমদানী করে হোয়াইট সুগার উৎপাদন:
সরকারী দলের আব্দুল মান্নানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সারা বছর চিনি কলগুলো চালু রাখার জন্য অমৌসুমে ‘র’ সুগার আমদানী করে হোয়াইট সুগার উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। চিনি কলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চিনি কলের উপজাত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্পটি ডেস্টিলারী, বায়ো-গ্যাস ও বায়ো কম্পোস্ট প্লান্ট অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব পরিকল্পণা কমিশনে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি চিনি কলের বর্জ পরিশোধনাগার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, চিনি কলগুলোর অনেক সমস্যা রয়েছে। এখনো এদের উৎপাদন সক্ষমতা আসেনি। সময়মত প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পাওয়া যায় না। কাঁচা মালের অভাবে ৫-৬ মাস শ্রমিকদের বসিয়ে রাখতে হয়। তবে চিনি কলের উন্নয়নে ডেসটেলারী প্রসেস চলমান, এটি একনেকে পাশ হয়েছে। 

একই প্রশ্নকর্তার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন,  চিনি কলগুলোর অনেক সমস্যা রয়েছে। এখনো এদের উৎপাদন সক্ষমতা আসেনি। সময়মত প্রয়োজনীয় কাঁচা মাল পাওয়া যায় না। আমাদের ইক্ষু গবেষনা কেন্দ্রের উন্নয়ন ততটা করতে পারেনি। সে কারণে কাঁচামালের অভাবে ৫-৬ মাস শ্রমিকদের বসিয়ে রাখতে হয়ে। তবে চিনি কলের উন্নয়নে ডেসটেলারী প্রসেস চলমান, এটি একনেকে পাশ হয়েছে।

চিনিকলের ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে:
শফিকুল ইসলাম শিমূলের চিনিকলগুলো থেকে কর্মী ছাটাইয়ের পর তাদের পাওনা পরিশোধ করা হয়নি বিষয়ে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, চিনিকল আমাদের লোকসানি প্রতিষ্ঠান। তারপরেও যেসব চিনিকল নতুন করে চালু করা হচ্ছে, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের সেখানে স্থানান্তর করা হচ্ছে, যেন চাকরিচ্যুত না হয়। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা যেটা বলা হয়েছে, আমরা সরকরি আইন অনুযায়ী সেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পূরণের ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের চিনিকল কারখানা যেগুলো চালু আছে বা বিভিন্ন সময়ে চালু হচ্ছে, সেখানে তাদের স্থানান্তর করা হচ্ছে। যাতে কেউ চাকরিচ্যুত না হয়। 

তিনি আরো বলেন, মিলগুলো চালু করে তাদের সেখানে চাকরির ব্যবস্থা করেছি। যদিও এটি আমাদের লোকসানি প্রতিষ্ঠান, তারপরও আমরা আমাদের শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য কল-কারখানাগুলো চালু করছি। যদিও আমরা লোকসান গুণছি। তারপরও বিশ্বাস করি, শ্রমিকদের সব পাওনাই পরিশোধ করবো।

সরকারি দলের সদস্য মকবুল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, লোকসানের কারণ চিনিকলগুলো বৃটিশ আমলে করা। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের ওপর দায়িত্ব পরে। বিভিন্ন পর্যায়ে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য কল কারখানাগুলো নষ্ট করা হয়েছে, কিছু বিক্রি করা হয়েছে। আর কিছু লুটপাট করা হয়েছে। যে জন্য এগুলো লাভজনক হয়নি। আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যাত্রা শুরু করেছি। বিনিয়োগ যে পর্যায়ে আসছে, তাতে আমাদের বিশ্বাস, চিনি শিল্প অলাভজনক থাকবে না। এছাড়া দেশীয় চিনির মান বাড়াতে মানসম্মত ইক্ষু চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর