১১ নভেম্বর, ২০১৯ ২১:৪৪

বাংলা বন্ড চালু বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের একটি বড় পদক্ষেপ: অর্থমন্ত্রী

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য :

বাংলা বন্ড চালু বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের একটি বড় পদক্ষেপ: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। বাংলা বন্ড চালু বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের একটি বড় পদক্ষেপ। এই বন্ড চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবাসী বিনিয়োগ আরো সহজতর হবে। 

আজ সোমবার লন্ডন স্টক মার্কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা টাকা বন্ডকে লিস্টিং করার অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলা বন্ড চালুর পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে বিশাল অবদান। এমনকি বাংলা বন্ড নামকরণটিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বলেও জানান তিনি। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইএফসির এশিয়া এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নেনা স্টেলকোভিক, ব্রিটেনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম, আইএফসি ডিরেক্টরবৃন্দ। 

লন্ডন সময় সকাল সাড়ে নয়টায় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ সেমিনার রুমে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়ার জন্য লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে চালু হয়েছে ‘বাংলা টাকা বন্ড’। এটি হবে একটি টাকা বন্ড। এই বন্ডের আকার হবে ১০০ কোটি ডলার। কিন্তু প্রাথমিকভাবে বাজার থেকে তোলা হবে ১ কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৪ কোটি টাকা। প্রবাসীরা ডলারে এই বন্ড কিনলেও প্রথমবারের মতো তা টাকায় রূপান্তর করে দেশের বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) হবে এই বন্ডের ইস্যু ম্যানেজার। 

এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশের টাকা কোনো আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। টাকা লন্ডন স্টক মার্কেটে লেনদেন হবে। যে কেউ এই বন্ড কিনতে পারবে। ডলার দিয়ে এই বন্ড কিনতে হবে। সেই ডলার টাকায় কনভার্ট হয়ে তা বিনিয়োগ করা হবে। আইএফসি বাংলাদেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেছে। এই ১ বিলিয়ন ডলার ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ আরো বাড়বে।

সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের সময়সীমা হতে পারে ৩ বছর মেয়াদি। পরে তা বাড়িয়ে ৫ বছর এবং সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর করা হতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রে দেখা গেছে রুপি বন্ড প্রথম ৩ বছর মেয়াদি ছাড়া হয়েছিল। পরে তার সময়সীমা বাড়িয়ে ৫ বছর করা হয়। এখন তা ১০ বছর পর্যন্ত হয়েছে। প্রবাসী ভারতীয়রা এই বন্ডে বিপুল হারে বিনিয়োগও করেছে।

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে এ ধরনের বন্ড ছাড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ’র বার্ষিক সভায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাথে আইএফসি’র নেতৃবৃন্দের এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এই বন্ড ছাড়ার প্রস্তাব দিলে তখনই প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।

এরপর আইএফসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায় এবং তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অর্থমন্ত্রণালয় একই বছর (২০১৫) ৪ অক্টোবর এক চিঠিতে ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার অনুমোদনের বিষয়টি জানায়। প্রবাসীদের জন্য ‘ডলার বন্ড’ থাকলেও বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো ‘টাকা বন্ড’ ছাড়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের মাধ্যমে যে অর্থ উত্তোলন করা হবে তা আইএফসি অর্থায়নের পরিচালিত বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর