রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন

দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল রাতে ভারতের ইউনিয়ন কেবিনেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে আম আদমির প্রধান অরবিন্দ কেজরিয়াল ইস্তফা দেওয়ার পর রাজ্যের উপ-রাজ্যপাল নজিব জঙ গতকাল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি মারফত রাষ্ট্রপতি শাসনের আবেদন করেন। শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন কেজরিওয়াল। গতকাল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো ওই চিঠির একটি প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও। গতকাল সন্ধ্যায় ইউনিয়ন কেবিনেটের সভা বসে। তাতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কংগ্রেস ও বিজেপির প্রবল বিরোধিতার মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী জনলোকপাল বিল বিধানসভায় তুলতে ব্যর্থ হয়ে শুক্রবার রাতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন  কেজরিওয়াল। আর এর মধ্য দিয়ে এএপির ৪৯ দিনের রাজ্য সরকারের পতন ঘটে।
গতকাল সকাল থেকেই কেজরিওয়ালের কর্মী-সমর্থকরা দিল্লিতে দলীয় প্রধানের বাড়ির সামনে ভিড় করতে থাকেন। একপর্যায়ে হাসিমুখে তাদের সামনে আসেন আম আদমি নেতা।  কেজরিওয়াল বলেন, আমি আর মুখ্যমন্ত্রী নই। তবে আমি আমার সাধ্যমতো করার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, জনলোকপাল বিল তার দলের মূল এজেন্ডা ছিল এবং রাষ্ট্রমূলের দুর্নীতি দূর করা অপরিহার্য। তবে দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে বিজেপি। এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অরবিন্দ  কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে  কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক গুরু আন্না হাজারে একে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন। বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল আরজেডির প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব বলেন, কেজরিওয়াল জানতেন যে বিপুল প্রতিশ্র“তি তিনি দিয়েছিলেন তা পূরণ করতে পারবেন না। তাই দায়িত্ব এড়ালেন। দিল্লির কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, কেজরিওয়াল সরকারের পদত্যাগে এক বড় ধরনের নাটকের অবসান হলো। তিনি পালানোর পথ খুঁজছিলেন। এখন শহীদের ভূমিকায় অভিনয় করছেন।
তবে আপের প্রস্তাব  প্রত্যাখ্যান করেছেন ভারতের মণিপুরের ‘আয়রন লেডি’ ইরম শর্মিলা চানু?
৪৯ দিনে আম আদমির যত অর্জন
অনেকটা ঝড়ের মতো এসে আকস্মিক ক্ষমতার মসনদ  থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জনলোকপাল বিল দিল্লির বিধানসভায় উত্থাপিত না হওয়ায় ৪৯ দিনের মাথায় পদত্যাগ করলেন তিনি। তবে ক্ষমতায় থাকাকালীন  কেজরিওয়াল ও তার দল উল্লেখযোগ্য যা কিছু করেছেন সেগুলোই নথি ঘেঁটে জানিয়েছে ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস)।
- মিটারসংযোগ থাকা বাড়িপ্রতি দৈনিক ৬৬৭ লিটার পানি বিনামূল্যে সরবরাহ। ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়Ñ এমন বাড়ির বিদ্যুৎ বিলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি। সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ বিল দিতে ব্যর্থ ২৪ হাজার গ্রাহকের ৫০ শতাংশ বিল মওকুফ।
- দাফতরিক কাজে ব্যবহƒত গাড়িগুলোকে লাল কিংবা নীল বাতিমুক্ত করা। এর মধ্য দিয়ে  ভিআইপি সংস্কৃতির অবসান।
- অবকাঠামোগত দুর্বলতায় থাকা সব সরকারি স্কুলপ্রতি এক লাখ রুপি দেওয়া, যাতে করে এগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা যায়।
-দুর্নীতিবিরোধী ও প্রাক-প্রাথমিক ভর্তি সহায়তা  হেলপলাইন চালু।
- নতুন পাঁচ হাজার ৫০০ অটোরিকশার অনুমোদন।
- ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমস প্রস্তুতিতে অনিয়মের অভিযোগে দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিত, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানো ও বিদ্যুৎ বিল বাড়ানোর কারসাজির অভিযোগে জ্বালানিমন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি, সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী মুরালি দেওরা এবং রিলায়েন্স শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (এফআইআর) দাখিল।
- দিল্লির তিনটি বেসরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশ। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।

সর্বশেষ খবর