পোলট্রি খাতকে করমুক্ত ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটি (বিপিআইসিসি)। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০তম বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান তারা। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (এফএও) ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায়, বিপিআইসিসির আহ্বায়ক মসিউর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক সামছুল আরেফিন খালেদ, এফওএ উপদেষ্টা হাসান আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এস মাহফুজুল বারী। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ডিমে আছে ভিটামিন এ, ই, বি-৬, বি-১২, ফোলেট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, থিয়ামিন, অ্যামিনো এসিড, প্যানটোথেনিক এসিড ইত্যাদি। এটি অত্যন্ত সহজলভ্য এবং দামেও সাশ্রয়ী।
অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমানে ডিমের দৈনিক উৎপাদন প্রায় ২ কোটি। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ডিমের দৈনিক চাহিদা হবে প্রায় ৪০-৪৫ কোটি। স্বাস্থ্যবিষয়ক জনসচেতনতা এবং আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু ডিম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার কারণে এবং সঠিক প্রচার ও পরিকল্পনার অভাবে ডিমের কাক্সিক্ষত চাহিদা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন তারা।বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ডিম খায় এ কথাটি যেমন সত্য, তেমনি এ কথাও সত্য যে, ন্যূনতম যে পরিমাণ খাওয়া দরকার তার অর্ধেকও আমরা খাচ্ছি না। এফএও-এর মতে সুস্থ থাকার জন্য জনপ্রতি বছরে অন্তত ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং নিরাপদ খাদ্য। মাত্র ২টি ডিম নারীর দৈনিক প্রোটিন চাহিদার ১/৪ ভাগ পূরণ করতে পারে। শুধু তাই নয়, শর্করা কমিয়ে প্রতিদিন ডিম খেলে, মাসে ৩ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব! আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, সপ্তাহে চারটি ডিম খেলে টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩৭ শতাংশ কমে যায়। সপ্তাহে ৬টি ডিম খেলে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ হ্রাস পায়।
স্বল্পমূল্যে ডিমের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পোলট্রিক করমুক্ত খাত হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে ডিমের প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর তাগিদ দেন পোলট্রি সংশ্লিষ্টরা।