‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ আইন’ প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। একই সঙ্গে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্যকে হালকাভাবে না নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রমাণ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের প্রতি তার যে সমর্থন ও দুর্বলতা ছিল—তা এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ঘোষণা ও গণহত্যা অস্বীকারকারীদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনতে ইউরোপের মতো ‘হলোকস্ট ডিনাইল অ্যাক্ট’ আইন প্রণয়নের দাবি জানান শাহরিয়ার কবীর।
খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বক্তব্যে নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের আইএসআই, আল-কায়েদা ও আইএস-এর মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনকে অনুপ্রাণিত করে।
এ সময় সংবিধানে রাষ্ট্রের চারটি মূলনীতি পুনঃস্থাপন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন প্রণয়ন, একাত্তরে যেসব দল ও বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের দ্রুত বিচার, দণ্ডিত গণহত্যাকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিতরণ, যুদ্ধে ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণসহ আট দফা দাবি জানানো হয়।বিচারপতি শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, জেনোসাইডের বিরুদ্ধে বিশ্বের ১৪টি দেশে সরাসরি ও বেশ কয়েকটি দেশে ভূতাপেক্ষ আইন আছে। সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের নিয়ে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও এখন এ আইন সময়ের দাবি।
সংগঠনের সহসভাপতি প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, খালেদা-গয়েশ্বরের বক্তব্য রাজনৈতিক নয়, পূর্বপরিকল্পিত। তাদের বক্তব্যে জঙ্গি সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে।
সংগঠনের আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, একদল কথিত বুদ্ধিজীবী, গবেষক ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা অঙ্ক কষে মেলাতে পারছেন না। এ ধরনের বক্তব্যের বিচারে আইন দুটি সময়ের দাবি রাখে।
সংবাদ সম্মেলনে ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন, যুদ্ধশিশু মনোয়ারা ক্লার্কসহ শহীদ পরিবারের সন্তানেরা উপস্থিত ছিলেন।
