মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
এনবিআর-এফবিসিসিআই মতবিনিময়

ভয় দেখিয়ে ভ্যাট আদায় বন্ধের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

এনবিআর-এফবিসিসিআই মতবিনিময় সভায় ভয় দেখিয়ে ভ্যাট আদায় বন্ধের অঙ্গীকার করা হয়েছে। গতকাল মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর যৌথভাবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় এফবিসিসিআই নেতারা অভিযোগ করেন, মূল্য সংযোজন কর-মূসক বা ভ্যাট আদায়ে সরকারি কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের হয়রানি বা ভয় দেখান। ব্যবসায়ীরা সত্ভাবে ভ্যাট প্রদানে পুরোপুরি প্রস্তুত উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ভয় দেখিয়ে বা জোর করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করা যাবে না। সভায় অভিযোগের জবাবে এনবিআর সদস্য (মূসক নীতি, বাস্তবায়ন ও আইটি) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর হয়রানি বা ভয় দেখিয়ে ভ্যাট আদায় করবে না। বরং অত্যন্ত সহমর্মিতার মাধ্যমে সুন্দর ব্যবহারে ভ্যাট আদায় করা হবে। এতে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মাহবুব আলম, উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ, পরিচালক হাবিব উল্লাহ ডন, হাসিনা নেওয়াজ, মুনতাকিম আশরাফ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক আবদুস সালাম, এগ্রিকালচার মেশিনারি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।

 

এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিতে চাই। তবে যারা নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছেন, তাদের ওপর হয়রানি চাই না। এনবিআরের উচিত ভ্যাটের আওতা বাড়ানো। এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখন থেকে আমরা হয়রানি নয়— সহমর্মিতার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করব। সমঝোতার মাধ্যমে ভ্যাট আদায় করতে হবে। তাই ভয় দেখিয়ে নয়, বরং আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) বুঝিয়ে ভ্যাট আদায় করতে রাজস্ব কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমে কর আদায় করতে হবে। ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকে হয়রানির কথা বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে এমন সমস্যা আছে। তবে তা সমাধানের চেষ্টা করব। নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে ব্যাপক আকারে ব্যবসায়ী ও জনগণকে জানাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হয়রানিমুক্ত কর আদায় পরিবেশ সবার প্রত্যাশা। আমরা বিনয়ের সঙ্গে বলব, আপনারা আমাদের কাছে সমস্যার কথা জানান, আমরা (এনবিআর) সুষ্ঠু আচরণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করব। ভ্যাটের নতুন আইন নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। নতুন ভ্যাট আইনে সবার জন্য সমন্বয় হচ্ছে না। তিনি আশ্বস্ত করেন, নতুন ভ্যাট আইন অনুযায়ী— সবার জন্য ভ্যাট আইন এক রকম হবে। ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার হিসাব সঠিকভাবে রাখলে ভ্যাট আদায় সহজ হবে।

এর আগে মতবিনিময় সভার মুক্ত আলোচনা পর্বের বক্তব্যে ডিসিসিআই পরিচালক আবদুস সালাম বলেন, নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এফবিসিসিআই ও এনবিআরের সমন্বয়ে যৌথ কমিটি গঠন করে দেন। কিন্তু যৌথ কমিটির সুপারিশগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। নতুন আইন বাস্তবায়নের আগে যৌথ কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ ও প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখারও দাবি জানান তিনি।

এগ্রিকালচার মেশিনারি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভ্যাট আদায়ে দ্বৈত নীতি অনুসরণ করছেন কর্মকর্তারা। পুরান ঢাকায় বংশাল সার্কেলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্যাকেজ ভ্যাট হিসেবে ১৪ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাস্তার অপর পাশে সূত্রাপুর সার্কেল প্যাকেজ ভ্যাট না নিয়ে ট্রেড ভ্যাট দিতে বলছে। এতে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই ভ্যাটের দাবিনামা পাঠানো হচ্ছে। অটো পার্টস টায়ার-টিউব মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা বলেন, প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখা হোক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর