রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
গ্রামের বাড়িতে তনুর পরিবার

‘আমরার কিয়ের ঈদ-চান্দ’

কুমিল্লা প্রতিনিধি

আনন্দের সঙ্গে সবাই পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করলেও ঈদের আমেজ নেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী নিহত সোহাগী জাহান তনুর পরিবারে। প্রতিবার তনুর পরিবার সেনানিবাসের বাসায় ঈদ উদ্যাপন করলেও এবার করেছে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। টেলিফোনে শুক্রবার সন্ধ্যায় তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, বাবা, আমরার কিয়ের ঈদ-চান্দ। এবার তনু নেই, তার বড় ভাই নাজমুল হোসেনও ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেনি। ভাই বাড়ি এলে তনু তার গলা জড়িয়ে ধরত। বোনের অনুপস্থিতি খারাপ লাগবে বিধায় সে বাড়িতে আসেনি। ঈদের দিন তনুর বাবা আর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন ঈদের নামাজ পড়েছেন গ্রামের বাড়ির মসজিদে। আসরের নামাজের পর বিকালে তনুর কবর জিয়ারত করেছেন। তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘১০ বছর পর গ্রামের বাড়িতে ঈদ করছি। তনু নাই, তবু সবার মুখে তনুকে নিয়ে জিজ্ঞাসা। আত্মীয়স্বজন যারাই ঈদ উপলক্ষে আমাদের বাড়িতে এসেছেন সবাই তনু হত্যার বিচার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বড় ছেলে নাজমুল বাড়ি না আসায় আর মেয়ে তনুর মৃত্যুতে আমার চারদিক খালি খালি লাগে। ঈদের টুকটাক রান্না আমার ছোট বোন সাজেদা বেগম করেছে। আত্মীয়স্বজন কারও বাড়ি যাইনি। মানুষই এসেছে তনুর বিষয়ে জানতে। তনুর চা বাগানে তোলা শেষ ছবিটি মানুষ দেখতে চেয়েছে। অনেকে ছবিটির কপি নিতে চেয়েছে। তনুর দাদার শরীর ভালো না। তিনিও মাঝে মাঝে তনুর কথা জানতে চান। বড় ছেলে নাজমুলকে বলেছি দাদাকে দেখে যেতে। সে এলে দুই-তিন দিন পর আমরা সেনানিবাসের বাসায় চলে যাব।’ উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৪ এপ্রিল দেওয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ। ১৬ মে তনুর কাপড়ে তিন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডি থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারও আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। ১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তা নিয়েও বিতর্ক হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর