সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিআরটিএর পর্যালোচনা সভা

বেপরোয়া গতি ওভারটেকিং বাড়াচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং ওভারটেকিংয়ের কারণে এবারের ঈদুল আজহার আগে ও পরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) পর্যালোচনা সভায়। গতকাল বিকালে রাজধানীর এলেনবাড়ীতে বিআরটিএ-এর সভাকক্ষে এই সভা হয়। এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে একই বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা সভায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২২টি মহাসড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ এই জাতীয় যানবাহন শতভাগ নিষিদ্ধের নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে বিকালে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিআরটিএ কার্যালয়ে ঈদ-পূর্ব ও পরবর্তী পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সড়ক দুর্ঘটনা এবং যানজট বিষয়ে আরেকটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন এবং একই নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়াও ওই বৈঠকে সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিআরটিএ-এর কর্মকর্তা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিডেন্ট রিসার্চ বিভাগের প্রতিনিধি, নিরাপদ সড়ক চাই-এর ইলিয়াস কাঞ্চন, লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় মহিলা সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিআরটিএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিশদ পর্যালোচনা করা হয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দূরপাল্লায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও ওভারটেকিংয়ের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আলোচনায় অশংগ্রহণকারী প্রায় প্রত্যেকের বক্তব্যে উঠে এসেছে। বক্তারা বলেছেন, বেশির ভাগ গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছে এ দুই কারণে। দূরপাল্লার নন-এসি বাস হানিফ পরিবহন, এনা পরিবহন, শ্যামলী, এস আর পরিবহনের মতো গাড়িগুলো দ্রুততম সময়ে একাধিক ট্রিপ দেওয়ার উদ্দেশ্যে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। এতে করে ঘন ঘন ওভারটেকিংয়ের ঘটনাও ঘটে। সে কারণেই দুর্ঘটনার হার বেড়ে যায় আশঙ্কাজনক হারে।

এ রকম অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে গাড়ির গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করার জন্য মত দেন বক্তারা। একই সঙ্গে গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করা হয়।

বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে— যেসব গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছে সেগুলো কেন ও কী কারণে দুর্ঘটনায় পড়েছে সেটি অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্ট পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে প্রতিবেদন গ্রহণ করা; দুর্ঘটনার শিকার গাড়িগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনে এসব পরিবহনের সদস্য পদ স্থগিত করা। এ ছাড়া চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিএ।

এদিকে সবার বক্তব্য শোনার পর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দেশের ২২টি মহাসড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ এই জাতীয় যানবাহন শতভাগ নিষিদ্ধ করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বলেন, অপ্রত্যাশিত যানজট এবং রাস্তার দুই পাশকে দখলমুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশকে আরও জোরালো ভূমিকা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে গাড়ির গতিসীমা ৮০ কিলোমিটারের বেশি হলেই হাইওয়ে পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বৈঠক সূত্র জানায়, হাইওয়েতে চলাচলকারী মাইক্রোবাস নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর