শিরোনাম
শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কর্ণফুলী তীরের বেদখলি ভূমিতে নির্মিত হবে হাইটেক পার্ক

কর্মসংস্থান হবে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণীর

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর উত্তর তীরে বেদখল হওয়া ৮৫ দশমিক ৫০ একর ভূমিতে নির্মিত হবে ৯টি সরকারি ও দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এ সব প্রতিষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে সরকারি এসব খাস ভূমি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এসব প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ফলে আরও এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম। কর্মসংস্থান হবে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণীর। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই নদীকে গিলে খাচ্ছেন দুই হাজার ১৭২ অবৈধ দখলদার। এ সব অবৈধ দখলদাররা কর্ণফুলী নদীকে ইচ্ছামতো ভরাট ও দখল করেছে। তবে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর পূর্বের অংশের ৮৫ দশমিক ৫০ একর ভূমিতে ৯টি সরকারি ও দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে ৪০ একর ভূমিতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক, ৩ একর ভূমিতে নৌযান মেরামত কারখানা, ৭ একর ভূমিতে চট্টগ্রাম নভোথিয়েটার, এক দশমিক ৫০ একর ভূমিতে টুরিস্ট পুলিশ সদর দফতর, এক একর ভূমিতে বাকলিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, এক একর ভূমিতে বাকলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ৫ একর ভূমিতে বিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ২০ একর ভূমিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়নমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অধীনে পরিবেশবান্ধব কন্টোল্ড ল্যান্ড ফিল্ড ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণ, পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণ, ২ দশমিক ৫০ একর ভূমিতে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, দশমিক ৫০ একর ভূমিতে মসজিদ এবং ৫ একরে সৎসঙ্গ বিহার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছিয়া খাতুন বলেন, কর্ণফুলী নদীর তীরে অনেক ভূমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হলে পরবর্তীতে আর কেউ দখল করতে পারবেন না। তবে চলমান মামলার রায়ের নিষ্পত্তি শেষে কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নালা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জমি রেখে এসব জমি বরাদ্দের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়।

আশা করছি নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তা দ্রুত এগিয়ে যাবে।            

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর সীমানা নির্ধারণ, নাব্য, স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা ও দূষণরোধের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২০১৫ সালের ১৮ জুন আরএস এবং বিএস রেকর্ড অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর বর্তমান অবস্থান ও দখলদারদের চিহ্নিতকরণ সংবলিত বাঁধাইকৃত ম্যাপ এবং অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে। ওই বছরের ১১ আগস্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবরে পাঠানো হয়। গত ১৬ আগস্ট আদালত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসনকে। 

এদিকে, কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদন মতে, আরএস রেকর্ড মূলে কর্ণফুলী নদীর বাকলিয়া ও পূর্ব পতেঙ্গা মৌজায় সর্বমোট ২ হাজার ১১২ অবৈধ দখলদার এবং বিএস রেকর্ড মূলে বাকলিয়া, মাদারবাড়ি, গোসাইলডাঙ্গা, মনোহরখালি, ফিরিঙ্গি বাজার মৌজায় ৬০ জন অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করা হয়। তবে এ দখলদাররা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। 

সর্বশেষ খবর