বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
সংসদে তাহজীব আলম সিদ্দিকী

আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ধর্মঘট আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরিবহন ধর্মঘট ও সীমাহীন জনদুর্ভোগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করলাম, আদালতের রায়ের প্রতিবাদে ধর্মঘট ডাকল পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনগুলো। ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলেও আকস্মিক এই ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ হয়েছে। দুই দিনের এ শ্রমিক ধর্মঘট ও অবরোধের ঘটনাকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। আপাতত দৃষ্টিতে এ ঘটনাকে আদালতের রায় বদলানোর কৌশল মনে হলেও এটা বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা ও আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, চালক ও মালিকরা আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে যেতেই পারেন। কিন্তু আন্দোলনের নামে জনগণকে জিম্মি করে আদালতের রায় বদলানোর চেষ্টা ঔদ্ধত্যপূর্ণ। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সুবাদে জানতে পারলাম একজন প্রভাবশীল নেতা ও মন্ত্রী, যিনি একজন শ্রমিক নেতাও, তার হস্তক্ষেপে ধর্মঘট আপাতত স্থগিত হয়েছে।

 আমি বিশ্বাস করতে চাই, সরকারের পক্ষ থেকে এই অযৌক্তিক ধর্মঘট বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছিল। আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রাখতে সরকার পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। বরং ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, কোনো গোষ্ঠী যদি তাদের হীনস্বার্থ রক্ষার জন্য সরকারের কাছে অন্যায় আবদার করে এবং আইনের শাসনের প্রতি অনাস্থা জানায়, তাহলে আমি সরকারকে অনুরোধ করব ভবিষ্যতেও শক্ত হাতে সেটি মোকাবিলা করার জন্য। তাহজীব আলম সিদ্দিকী বলেন, কিছু দুঃখজনক খবরও আমরা পেয়েছি। যাতে মনে হয়েছে, এই ধর্মঘট ডেকে তারা জনগণকে জিম্মি করে তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে উঠতে চেয়েছে। জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সাময়িক দুর্ভোগ হলেও জনগণ যেভাবে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অন্যায় দাবির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে তা দেখে আমি উচ্ছ্বসিত হয়েছি। আজকে দুর্ভোগের শিকার অসংখ্য ঢাকাবাসীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অধিকাংশই এক বাক্যে বলেছে, আদালতের বিচারই চূড়ান্ত। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যতই শক্তিশালী হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সরকার সব সময় জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান দেখাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ খবর