শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কাপািসিয়ায় হাত-পা বেঁধে জবাই, অটোরিকশা ছিনতাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

মফিজুর রহমানকে হাত-পা বেঁধে জবাই করে একটি অটোরিকশা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যার পর দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে মাটি খুঁড়ে লুকিয়ে পালিয়ে গেছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় উপজেলায়। ঘটনার পর প্রথমে মৃতদেহ উদ্ধার ও পরে রাকিব নামের একজনকে আটক করলে তার স্বীকারোক্তিতে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়। জড়িত ৩জনকে গ্রেফতার করে গতকাল গাজীপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো— উপজেলার পশ্চিমপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে রাকিব মিয়া (২২), আবুল হাসেমের ছেলে আকরাম (২৩) ও সাফাইশ্রী গ্রামের মাহতাবের ছেলে শামীম (২৮)। তবে শামীমের স্বজনরা বলছে শামীম নামের আরেকজন অটোচালক রয়েছে। ওই শামীমও সাফাইশ্রী এলাকায় থাকতো। সে ঘটনার পর থেকে পলাতক। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মফিজুর রহমান (১৮) নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর ২০ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে আট কিলোমিটার দূরে একটি বাগান থেকে তার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

 মফিজুর কাপাসিয়া সদর ডাকঘরের নৈশপ্রহরী আইয়ুবুর রহমানের ছেলে। তাদের বাড়ি সিলেট সদর থানার মোগলগাঁও গ্রামে। দীর্ঘ দিন যাবত তারা কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামে ভাড়া থাকত। একজনকে আটকের পর তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিচ্ছিন্ন মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মনিরুজ্জামান খান বলেন, মরদেহ উদ্ধারের দিনই অজ্ঞাত পরিচয় চারজনকে আসামি করে মফিজুরের বাবা আইয়ুবুর রহমান মামলা করেন। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পাশের তরুণ পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে রাকিব মিয়াকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে স্বীকার করে সে। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাত ১টার দিকে পাশের হরদারটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বাগানের ঝোপের ভেতর মাটির নিচে পুঁতে রাখা বিচ্ছিন্ন মাথাটি উদ্ধার করা হয়। রাকিব মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। স্বীকারোক্তিতে সে (রাকিব) জানিয়েছে, তার দুই প্রতিবেশী ইসমাইল, আকরাম ও পাশের সাফাইশ্রী এলাকার শামীম ছিনতাইকারী দলের সদস্য। ওই তিনজন তাকে ৫ হাজার টাকা দেবে বলে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সে। পরে তারা যাত্রী সেজে লেপতোষক নেওয়ার কথা বলে থানার সামনের সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে। রাকিবের বাড়ির সামনে ওই তিনজন নেমে অটোরিকশা রেখে চালক মফিজুরকে ঘরে লেপতোষক পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। লেপতোষক পৌঁছে দিয়ে ফিরে ওই তিন যাত্রীকে খুঁজে না পেয়ে রাকিবের কাছে ভাড়া চান মফিজুর। পরে রাকিব ভাড়া দেওয়ার জন্য ওই তিনজনকে খোঁজার কথা বলে মফিজুরকে পাশের খালেকেরটেক বাগানে নিয়ে চারজনে মিলে রশি দিয়ে বেঁধে মাটিতে ফেলে দেয়। এ সময় মফিজুর চিৎকার দিতে চেষ্টা করলে তার মুখে কাপড় গুজে দেয়। পরে একজন মফিজুরের হাত ধরে, একজন ধরে মাথা, অমি মাফিজুরের পা শক্তভাবে ধরে রাখি। ইসমাইল ছুরি দিয়ে মফিজুরকে জবাই করে। তখন মফিজুরের মাথা আলাদা হয়ে যায়। পরে মাথাটি একটি গর্তে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে তারা অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।

কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামী ইসমাইল এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর