শুক্রবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সোনা নিলামের কথা বলে কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাস্টমস বিভাগের জব্দ করা সোনা নিলামে দেওয়ার কথা বলে মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। এই চক্রের প্রধান খন্দকার মো. ফারুক ওরফে ওমর মবিন নিজেকে কাস্টমস বিভাগের সহকারী কমিশনার, কাস্টমস কমিশনারের পিএস (একান্ত সচিব) বলে পরিচয় দিতেন। তিনি ৬-৭ বছর আগে জামালপুরের এক এমপির পিএস ছিলেন। ওই চাকরি ছাড়ার পর তিনি প্রতারণাকে পেশা হিসেবে নেন।

গতকাল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, বুধবার রাজধানীর বেইলি রোড থেকে ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে দুই সহকারীও গ্রেফতার হন। তারা হলেন- ইলিয়াস ওরফে নুর ইসলাম সরকার এবং সাইফুল ইসলাম। তাদের কাছে ১৮টি ভিজিটিং কার্ড, ৪টি ব্যাংকের চেক, ৭টি মোবাইল ফোন ও ১৩টি সিমকার্ড পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃতরা কাস্টমস বিভাগের জব্দ করা সোনার বার কম টাকায় নিলামে দেওয়ার কথা বলে অভিনব কায়দায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে আটকে থাকা টাকা ছাড় করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েও বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারণার আগে তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করত। সেগুলো অনেকটা আসল কাগজপত্রের মতোই।

সিআইডি কর্মকর্তা আরও জানান, প্রতারণার কাজে ফারুক নিজেকে কাস্টমস কমিশনারের পিএস এবং ফারুকের পিএস বলে পরিচয় দিতেন গ্রেফতার ইলিয়াস ও সাইফুল। ফারুকের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজে ৪০ কোটি টাকার চেকের কপি ও অসংখ্য ফাঁকা চেকের কপি পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে কাস্টমস গোয়েন্দা বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে যেতেন। যাতে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা বুঝতে পারেন এরা বড় মাপের মানুষ। তারা সময় সুযোগ বুঝে নিজেদের বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে।

মৃণাল নামের এক ভুক্তভোগী জানান, ফারুক তাকে একদিন ফোন করে বলেন, কাস্টম কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে যেসব সোনা জব্দ করেছে সেসব নিলামে বিক্রি করা হবে। মৃণাল ওই সোনা কিনতে রাজি থাকলে কম দামে তার কাছে এসব বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারবেন। পরে সোনা জব্দসংক্রান্ত কাগজপত্র (ভুয়া) দেখিয়ে গত ৬ জানুয়ারি মৃণালের কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা নেন ফারুক।

সর্বশেষ খবর