২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো অধরা রয়ে গেছে। তারাই এই ঘটনার পর নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে এই মামলার রায়ে কোর্টের পর্যবেক্ষণেও ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পিলখানা হত্যাকান্ডের প্রচার ও অপপ্রচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। তুলি হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ, সাবেক সচিব নাছির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।, অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার বলেন, ২০০ বছরের পুরনো বাহিনীতে হঠাৎ করেই বিদ্রোহ হয়নি। এটি পূর্বপরিকল্পিত। ষড়যন্ত্র ছাড়া এত বড় হত্যাকা- হতে পারে না। অনেকে বলেন, সেনা অভিযান হলে এত হত্যাযজ্ঞ হতো না। এটা ঠিক নয়। কারণ ঘটনার দিন এক ঘণ্টার মধ্যে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের কাছে মর্টার শেলসহ ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিল। যদি সেনা অভিযান চালানো হতো তাহলে বিদ্রোহীরা নিজেদের বাঁচাতে পাল্টা হামলা করত। সারা দেশে ৪৮টি ব্যাটালিয়নে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যেত। এতে সাধারণ লোকজনের হতাহতের সংখ্যা বাড়ত। ওই ঘটনার পর ৪০ জন সেনা সদস্য জীবিত বেঁচে আসে। তারাও মারা যেত।
মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, এ ধরনের হত্যাকা- সবসময় রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। যেমনটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এটি কারা ঘটিয়ে থাকে? বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্বের কট্টর ও মৌলবাদীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমাদের এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে কট্টর ও স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদ রয়েছে। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ ছিল চমকপ্রদ। বিশ্বে এটি প্রশংসিত হয়েছে। কারণ বল প্রয়োগ করলে নিরীহ মানুষ মারা যেত। এটি হলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হতো। এতে করে দেশ অশান্ত হয়ে উঠত। দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত। যার কারণে বাংলাদেশ এখন শান্তিপূর্ণ আছে। আর এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা অন্তর জ্বালায় ভুগছে। এ জ্বালা থেকেই তারা অপপ্রচারে লিপ্ত আছে।
