মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

সোনালী ব্যাংকের ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোনালী ব্যাংকের ৩৮ কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ব্যাংকের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম), উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এবং ব্যবসায়ীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল কমিশনের সভায় এ অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

 জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় মামলা হয়। মামলায় ফেয়ার কেমিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম, পরিচালক ফাতেমা ইসলাম এবং লালবাগের বাকের হোসেন, জামির হোসেন, জরিনা আক্তার ও ওমর ফারুককে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল স্থানীয় কার্যালয়ের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও ডিজিএম শওকত আলী, ডিজিএম আবদুল কাদির খান, সাবেক গোডাউন কিপার-কাম-ক্লার্ক আবদুল মতিন, ফেয়ার কেমিক্যালসের সাবেক গোডাউন চৌকিদার মো. সরওয়ার্দী, কালিয়াকৈর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মো. সানোয়ার হোসেন এবং মো. আবদুল ওহাবকে আসামি করা হয়।

ফখরুল ইসলাম গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার কৌচাকুড়ি মৌজায় ফেয়ার কেমিক্যাল নামে একটি নারকেল তেল উৎপাদন কারখানা স্থাপন করেন। তিনি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার স্ত্রী ফাতেমা ইসলাম পরিচালক। এই প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বিভিন্ন সময় সোনালী ব্যাংকের মতিঝিলের স্থানীয় কার্যালয় (লোকাল অফিস) থেকে ২২ কোটি ৩০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়, যা প্রতিষ্ঠানটি উত্তোলন করে। ২০০৪ সালে ওই ঋণ সুদাসলে ৩৭ কোটি ২২ লাখ ৩ হাজার ৯৬৮ টাকায় দাঁড়ায়। ঋণের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে কালিয়াকৈর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পাঁচটি বন্ধকীয় দলিলের মাধ্যমে ৮৩ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি, ওই জমির ওপর স্থাপিত/স্থাপিতব্য দালান, কারখানা, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের অনুকূলে বন্ধক রাখা হয়, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। ঋণের টাকা পরিশোধ না করে অথবা ওই জমি বন্ধকী দলিলের শর্ত ও আমমোক্তারনামা দলিলের শর্ত অনুসারে ঋণ পরিশোধ ছাড়া বিক্রি, হস্তান্তর, রূপান্তর, পরিবর্তন কিছুই করা যাবে না। তবু ফখরুল ইসলাম কালিয়াকৈর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাফকবলা দলিলমূলে মো. বাকের  হোসেন, বাকের হোসেনের স্ত্রী জরিনা আক্তার, ছেলে জমির হোসেন ও ভাগনে ওমর ফারুকের কাছে দেড় কোটি টাকায় ওই জমি বিক্রি করেন। জমি বিক্রি করার সময় ওই জমিতে ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা পাঁচ কোটি টাকারও বেশি যন্ত্রপাতি ছিল। এ ছাড়া কারখানার প্রায় ১৩ কোটি টাকার কাঁচামাল ছিল, তাও বিক্রি করে দেওয়া হয়। ওই সব মালামাল তদারকির কাজে ব্যাংকের নিয়োজিত আবদুল মতিন ও মো. সরওয়ার্দী ব্যাংকের স্বার্থ অক্ষুণ্ন না রেখে ফখরুল ইসলামকে ওই সব পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আত্মসাতে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর