শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিজিবি কোনো বাড়ি গিয়ে জানবে না গরু দেশি না ইন্ডিয়ান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিজিবি কোনো গৃহস্থবাড়ি কিংবা গোয়ালে গিয়ে চেক করবে না, হাটবাজারেও জানতে চাইবে না কোন গরু দেশি আর কোন গরু ভারতের। তবে সীমান্ত এলাকায় তাদের যে কাজ তা তারা করবে। গতকাল দুপুরে ঢাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরের দরবার হলে দেশের সীমান্ত এলাকায় মাদক ও মানব পাচার এবং চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও সমস্যা চিহ্নিতকরণ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে নির্বাচিত এমপি, মন্ত্রী, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধানসহ বিভিন্ন সংস্থা বা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন। ঠাকুরগাঁওয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের সংঘর্ষের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনায় যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সে বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে নিজস্ব একটি তদন্ত কমিটি ছাড়াও আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

তদন্ত রিপোর্ট কিছু কিছু আসছে আবার কিছু বাকি রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা মনে করি, এ তদন্ত রিপোর্টগুলো মামলার আলামত হিসেবে গ্রহণ করে কাজ করা হবে।’ গত দুই মাসে সীমান্ত হত্যা বেড়েছে। এত সুসম্পর্কের মধ্যেও কেন হত্যা বেড়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অতিউৎসাহী হয়ে আমাদের লোকেরা সীমান্ত এলাকায় চলে যাওয়ায় এমনটা হচ্ছে।’

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এমপি, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় দেশের মাদক সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মাদক ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসে। আমরা ভারতকে সীমান্তবর্তী ফেনসিডিলের কারখানাগুলো বন্ধ করার অনুরোধ করেছি। ভারত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক চোরাচালান বন্ধে ভারতের সঙ্গে ডিসি-ডিএম, বিজিবি-বিএসএফ, মন্ত্রী-সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, নিয়মিত হচ্ছে। কিন্তু এর ঠিক উল্টো হচ্ছে মিয়ানমার। মিয়ামারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির কাছে আমি বলেছি, তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিজিপি) বলা হয়েছে, কিন্তু তারা মাদক বন্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এ বিষয়ে তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক তৈরি করলেও মিয়ানমার এতে স্বাক্ষর করেনি। তবে আমরা আরও বিকল্পভাবে দেশকে মাদকমুক্ত করার পরিকল্পনা করেছি।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি)ি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ একসঙ্গে কাজ করলে ওপার থেকে মাদক আসা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।’

র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা মাদকের আসামি ধরছি কিন্তু বিচারকের সংখ্যা কম থাকায় সময়মতো তাদের বিচার হচ্ছে না। বিচারে দেরি হওয়ায় একসময় এসব মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সাক্ষী পাওয়া যায় না, আলামত পাওয়া যায় না।’

সর্বশেষ খবর