শিরোনাম
শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

গলাকাটা বাস ভাড়া আদায় থামছেই না

চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের নতুন ব্রিজ থেকে পটিয়া পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা। কিন্তু ৪০ থেকে ৫০ টাকা ভাড়া আদায় করায় ১০টি বাসকে মামলা ও ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গত ১৬ মে এ অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু অভিযানের পরদিনই ফের ৪০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করছে বাসগুলো। বিআরটিএ প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করলেও গলাকাটা ভাড়া আদায় কোনোমতেই থামছে না। বরং গণপরিবহনে নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করছে। আন্তঃজেলা বাস ও দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোর গলাকাটা ভাড়া আদায় লাগামহীনভাবে চলছে। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাত্রীবেশে বাসে ওঠে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করেও লাগাম টানতে পারছেন না।  বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘আমরা যাত্রীবেশে বাসে চড়ে, কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা নৈরাজ্য প্রত্যক্ষ করেছি। প্রতিটি অভিযানে জরিমানা ও মামলাও হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘কেবল আইনপ্রয়োগ করে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। প্রয়োজন নিজের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ তৈরি এবং অন্যকে না ঠকানোর মানসিকতা। অন্যথায় অভিযানে জরিমানাসহ নানা শাস্তি দেওয়া হবে ঠিকই, কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়।’ বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। কোনো বাস অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে কিনা, টিকিটে ভাড়া উল্লেখ আছে কিনা, কাউন্টারগুলোতে ভাড়ার চার্ট আছে কিনা এবং যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছরই ঈদ সামনে রেখে দূরপাল্লার বাসের টিকিটের অতিরিক্ত চাহিদা থাকে। এ চাহিদাকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী টিকিটের দাম দ্বিগুণ করা, টিকিটে ভাড়ার উল্লেখ না থাকা, টিকিটের কৃত্রিম সংকটসহ নানাভাবে নৈরাজ্য তৈরি করে। এবারও চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া, অলঙ্কার, এ কে খান ও কর্নেলহাটের দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে অভিন্ন চিত্র দেখা যায়। গতকাল বিকালে সরেজমিন গিয়ে যাত্রীদের অন্তহীন অভিযোগ পাওয়া যায়। নওগাঁগামী যাত্রী আবুল কালাম বলেন, ‘চট্টগ্রামের এ কে খান থেকে নওগাঁর নিয়মিত বাস ভাড়া ৮০০ টাকা হলেও আর এম ট্রাভেলস নামের বাস এখন দাবি করছে এক হাজার ৩৫০ টাকা। এ ব্যাপারে কাউন্টারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দেন না।’  

তাছাড়া চট্টগ্রামের কর্নেল হাট থেকে বগুড়ার নিয়মিত ভাড়া ৭৫০ টাকা হলেও এখন আদায় করছে এক হাজার ২৫০ টাকা, অলঙ্কার থেকে রাজশাহীর নিয়মিত ভাড়া ৬০০ টাকা হলেও এখন এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। 

সর্বশেষ খবর