গাছটির জন্ম পতিত জমিতে, ছোট ছোট সবুজ পাতা। গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাদা ফুল, নাম তার ‘দন্ডকলস’ । মধু ভরা ফুলে ভ্রমরের আনাগোনা। বাতাসের দোলে দোল খায় পথে-ঘাটে।
প্রাকৃতিকভাবে জন্ম হয় গুল্ম জাতীয় ছোট এই উদ্ভিদটির। এর সাদা ফুল মুখে নিলে মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয়। তবে পাতা চিবালে মুখে তেতো স্বাদ লাগবে। এই গুল্ম উদ্ভিদটির নাম ‘দ-কলস’।
এই গাছের উচ্চতা ১ থেকে দেড় মিটার হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েকটি গাছ একত্রে জন্মে ঝোপালো ভাবে। সারা বছরই এ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। ফুল ফোটার আদর্শ সময় মার্চ ও মে মাস।আঞ্চলিক ভাষায় বিভিন্ন নামে ডাকা হয় ছোট গুল্ম জাতীয় এই গাছটিকে। কোনো এলাকায় ‘মধু গাছ’, ‘কানশিসা’ আবার কোথাও ‘কানশিকা’ নামে পরিচিত। তবে এই গাছের আসল নাম ‘দন্ডকলস’।
সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ ও রংপুর-গঙ্গাচড়া সড়কসহ জেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে দন্ডকলস গাছ।
কারমাইকেল কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র চন্দন সাহা বাপ্পী জানান, দিন দিন কমে যাচ্ছে এই উদ্ভিদটি। আগে ব্যাপক হারে সড়কের ধারে, মেঠো পথে, পতিত জমিতে আর বিভিন্ন ফসলের বাগানে দেখা যেত। কিন্তু এখন দন্ডকলস আর তেমন দেখা যায় না।
শহুরে জনপদে দন্ডকলস খুব বেশি পরিচিত না হলেও গ্রামের মানুষের কাছে এটি উপকারি উদ্ভিদ হিসেবে বেশ সমাদৃত। এই উদ্ভিদে রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। এর পাতার রস তেতো হলেও ফুলের মধু মিষ্টি স্বাদের।
সর্দি ও কাশি হলে এই গাছের পাতা সিদ্ধ করে কালোজিরা দিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া দন্ডকলসের পাতা ও শিকড় রস করে আদাসহ গরম পানি দিয়ে খেলে কাশি কমে যায়।
ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ এই গাছ রক্ষা করা দরকার বলে মনে করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘দন্ডকলসের’ গুণ না জানার কারণে আমাদের কাছে এর কদর নেই। কিন্তু গ্রামীণ জনপদে এখনো এই গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদটির ব্যবহার দেখা যায়।