সোমবার, ৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

খতনার সময় নড়াচড়া, শিশুকে চড়-থাপ্পর চিকিৎসকের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) খতনা করার সময় ব্যথায় নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করায় আয়মান আশরাফ (৫) নামে নার্সারি শ্রেণির এক শিশুকে চড়-থাপ্পড় ও নখের আঁচড়ে জখম করেছেন চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের নাম নজরুল ইসলাম ফারুক। শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, গত শনিবার সকালে এ ঘটনার পর থেকে শিশুটি আতঙ্কে রয়েছে। পরিবারের বাইরের কোনো মানুষ দেখলে ভয়ে আঁতকে উঠছে। রাতে ঘুমাতে পারছে না।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও (আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা) ডা. শফিক আমিন গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনাটি খুবই অন্যায় ও দুঃখজনক। শিশুর স্বজনদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই চিকিৎসককে ডেকে সাবধানও করে দেওয়া হয়েছে। শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ব্র্যাক ব্যাংকের ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম মুরাদের শ্বশুরবাড়ি বগুড়া শহরের মালতিনগর এলাকায়। তার স্ত্রীর নাম মাসুমা রহমান মিশু। তাদের সন্তান আয়মান ঢাকার মাইলস্টন স্কুল ও কলেজের নার্সারির ছাত্র। ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় গিয়ে আয়মানকে খতনা করার উদ্যোগ নেন তারা। মিশু কয়েকদিন আগে তার আত্মীয় (খালা) সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহানা পারভিন বকুলের মাধ্যমে আয়মানকে ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ফারুককে দেখান। ওই চিকিৎসক শনিবার সকালে খতনা করার সময় দেন। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আয়মানকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে অপরাজিতা নামে ঢাকার ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী, নার্স বকুল ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর ডা. ফারুক অপারেশন শুরু করেন। কিন্তু ঠিকমতো অবশ না হওয়ায় আয়মান নড়াচড়া ও কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় ডা. ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটির গালে ছয় থেকে সাতটি চড়-থাপ্পড় ও উরুতে নখের আঁচড় দেন। এ সময় সেখানে থাকা নার্সরা অনুরোধ করেও ওই চিকিৎসককে শান্ত করতে পারেননি।
 তিনি নার্স ও অন্যদের ওটি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আবারও লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর খতনা করানো হয়। শিশু আয়মান অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হওয়ার পর বাবা-মাকে জানায়, ‘আর কখনো ওই ডাক্তারের কাছে যাব না, ডাক্তার মারে’। গতকাল দুপুরে ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর অনেকের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

সর্বশেষ খবর