শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিজেপিতে যোগ দেওয়া অঞ্জু ঘোষ কোন দেশের নাগরিক?

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বিজেপিতে যোগ দেওয়া অঞ্জু ঘোষ কোন দেশের নাগরিক?

বিজেপিতে যোগ দিলেন এক সময়ের বাংলাদেশি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ। বুধবার কলকাতায় বিজেপির কার্যালয়ে দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারদের সামনে বিজেপিতে নাম লেখান ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ খ্যাত অঞ্জু। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের কাছে আসল বেদের মেয়ে জ্যোৎ¯œা রয়েছে। আর অন্যদের কাছে নকল রয়েছে। উনি অনেক দিন ধরেই বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। অবশেষে আজ যোগ দিলেন।’ এই ঘোষণার পর অঞ্জুর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন দিলীপ ঘোষ। 

১৯৮৯ সালে ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎ¯œা’ ছবিতে চিরঞ্জিতের বিপরীতে অভিনয় করে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যান এই অভিনেত্রী। দুই বাংলা মিলেয়ে অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। বাংলাদেশের নায়িকা হলেও অঞ্জু এখন কলকাতার সল্টলেকে বাস করেন।

বিজেপিতে যোগদানের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে- অঞ্জু ঘোষ কোন দেশের নাগরিক? অঞ্জুর জন্ম ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলায়। উইকিপিডিয়াতেও বলা আছে তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। এতে করে বিদেশি নাগরিক হয়ে কীভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারে তা নিয়ে বিতর্ক উঠতে শুরু করেছে। এদিন অঞ্জুর বর্তমান নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে চাননি। অঞ্জুকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে কি না বা এখনো বাংলাদেশি নাগরিক আছেন কি না? এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষও।

বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গেছে। টুইট করে রাজ কাপুর নামে এক ব্যক্তি দাবি তুলেছেন ‘অঞ্জু ঘোষের উচিত তার নাগরিত্বের বিষয়টি পরিষ্কার করা।’ আনন্দ প্রতাপ সিং নামে এক ব্যক্তি জানান ‘দিলীপ ঘোষ কী করছেন? ওই নারীকে (অঞ্জু) বহিষ্কার করুন। আমাদের রাজনীতিতে বাংলাদেশি নাগরিকের দরকার নেই।’

দুই মাস আগেই ভারতের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারণায় অংশ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন বাংলাদেশের দুই অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ও গাজী নূর। গত ১৪ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সমর্থনে একটি প্রচারণায় অংশ নেন ফেরদৌস। অন্যদিকে ‘দমদম’ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌগত রায়ের হয়ে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায় আরেক বাংলাদেশি অভিনেতা গাজী আবদুন নূরকে। যা নিয়ে সেসময় বিতর্ক কম হয়নি। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচন বিধি ভঙ্গেরও অভিযোগ তোলা হয়। এরপরই ফেরদৌসকে কালো তালিকাভুক্ত করে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে দুই অভিনেতাকেই ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ভারতের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য কোনো বিদেশি নাগরিককেই কোনো ক্যাটাগরিতেই ভিসা ইস্যু করা হয় না। স্বাভাবিকভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তৃণমূলের পর এবার কী বিজেপিও বাংলাদেশিদের স্বাগত জানাতে চলেছে?

সর্বশেষ খবর