শনিবার, ২২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভোটের আগের রাতে নৌকা প্রতীকে সিল

দুই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা অভিযুক্ত, মামলা নেয়া হয়নি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম ও কটিয়াদী থানার সাবেক পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দীনের বিরুদ্ধে কটিয়াদী থানায় এজাহার দাখিলের তিনদিন পরও মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। কটিয়াদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বুধবার কটিয়াদী থানায় এজাহারটি দাখিল করেন। গত ২৪ মার্চ কটিয়াদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এর আগের রাতে ৮৫ নং ভোট কেন্দ্রে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল মারার ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলার ৮৯টি কেন্দ্রের সব কটির ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম ও কটিয়াদী থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে নির্বাচন কমিশন থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত করে এর সত্যতা পায়। তদন্তের পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে গত ১০ জুন উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২) মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক স্মারকে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

স্মারকে উল্লেখ করা হয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম এবং কটিয়াদী থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীনের সঙ্গে আসা আমজাদ হোসেন লিটন, শুভ, বকুল, মোখলেছ, জিতু, সুমন, মামুন, মাফুজ, শরীফসহ আরও কতিপয় সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্ত ৮৫ নং ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের পূর্বরাতে প্রিসাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেন্দ্র ইনচার্জকে হুমকি প্রদান করে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল প্রদান করা এবং দায়ী সংশ্লিষ্ট ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও ব্যক্তিবর্গ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা-২০১৩ এর বিধিমালা ভঙ্গ করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। শনাক্তকৃত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা-২০১৩ এর বিধি ৭৩, বিধি-৮০ এর আলোকে রিটার্নিং অফিসারকে মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, বুধবার রাতে কটিয়াদী থানায় মামলা করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার মামলাটি নথিভুক্ত করা হবে মর্মে জমা রাখেন। কিন্তু তিনদিন পরও মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি। এ ব্যাপারে কটিয়াদী থানার ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত এজাহার গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বর্তমানে বরিশালে কর্মরত এবং ওসি সামসুদ্দীন কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর