বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাগেরহাটের শিশু ডিপজল হত্যা মামলার ফাঁসির তিন আসামি হাই কোর্টে খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে দেড় বছরের শিশু ডিপজল হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত তিন আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট। আসামিদের আপিল গ্রহণ ও ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে গতকাল বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এবং বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ, সঙ্গে ছিলেন সাইফুর রহমান রাহি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান মোহন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। খালাস পাওয়া তিন আসামি হলো শিশুটির মা লতিফা বেগম, মেল্লাহাট উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের আয়েন উদ্দিন  মোল্লার ছেলে মনির মোল্লা ও লুৎফর রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগম।

তাদের মধ্যে মনির ও নাজমা ভাই- বোন। আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ সাংবাদিকদের বলেন, মামলায় চাক্ষুস সাক্ষী না থাকা এবং শিশুটির হত্যার বিষয়ে বাদী পক্ষের তথ্য ও বক্তব্যে গরমিল থাকায় আসামিরা খালাস  পেয়েছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান  মোহন বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্যে গরমিল থাকায় এবং বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণে গরমিল থাকায় ডেথ রেফারেন্স খারিজ করা হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, লতিফা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী মনির মোল্লার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে লতিফা  বেগমকে তার স্বামী ইকু বিশ্বাস মারধর করেন। সম্পর্কে বাধা ও মারপিটের ঘটনায় আসামিরা ইকু বিশ্বাসের ওপর ক্ষুব্ধ হন। ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল ভোরে ডিপজল নিখোঁজ হয়। পরদিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই মোল্লাহাট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর মনির ও নাজমাকে আসামি করে  মোল্লাহাট থানায় হত্যা মামলা করেন ইকু বিশ্বাস। তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১০ মে এজাহারভুক্ত দুই আসামি ও শিশুটির মা লতিফা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল ডিপজলকে হত্যার দায়ে মা ও দুই প্রতিবেশীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেন বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান। পরে আসামিদের মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবে মামলাটি হাই কোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন।

সর্বশেষ খবর