বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

মৎস্য সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ থেকে শুরু হচ্ছে মৎস্য সপ্তাহ। চলবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত। এবারের প্রতিপাদ্য- মৎস্য খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা। বিলুপ্তির পথে ৪১ প্রজাতির দেশি মাছ। দেশের হাওর-বাঁওড়, নদ-নদীসহ পুকুর ও নালা দখল দূষণের শিকার। এসব নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়ের অধিকাংশই নির্বিচারে শিল্প বর্জ্য, জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমারে ব্যবহার্য জ্বালানি তেলের বর্জ্য নিক্ষেপে পানিকে দূষিত করছে।

একইভাবে কৃষি জমিতে অধিক ফলনের আশায় অধিক হারে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগ করায় নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, পুকুর, ডোবা, জলাশয়ে মাছের অবস্থান, প্রজনন, ক্রমে হুমকির মুখে  ঠেলে দিচ্ছে। দেশি নানা প্রজাতির মাছ রক্ষায় মৎস্য অধিদফতর প্রতি বছরই মৎস্য মেলার আয়োজন করে। একই কর্মসূচি জেলা উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদন এবং রপ্তানিতে বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদনে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।

কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, টেংরা, পুঁটি, ডারকা, মলা, ঢেলা, চেলা, শাল চোপরা, শৌল, বোয়াল, আইড়, ভ্যাদা, বোয়াল, বাইন, খলিসা, ফলি, চিংড়ি, মালান্দা, খরকাটি, গজার, শবেদা, চেং, টাকি, চিতল, গতা, পোয়া, বালিয়া, উপর চকুয়া, কাকিলাসহ ৪১ প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রামাঞ্চলে পৌষ-মাঘ মাসে পুকুর, খাল, ডোবা, ঘের থেকে দেশি মাছ ধরার ধুম পড়ত। শীতকাল ছাড়া বর্ষাকালে ধানি জমিতে কইয়া জাল, বড়শি ও চাঁই পেতে মাছ ধরার রীতিও হারিয়ে গেছে অনেক এলাকা থেকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে ২০ কারণে। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, সমুদ্রের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবৈধ ব্যবহার, ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয় দূষণ, উজানে বাঁধ নির্মাণ, নদী সংশ্লিষ্ট খাল-বিলের গভীরতা কমে যাওয়া, ডোবা ও জলাশয় ভরাট করা, মা মাছের আবাসস্থলের অভাব, মা মাছের ডিম ছাড়ার আগেই ধরে ফেলা, ডোবা-নালা পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের চাষ করা ও মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটার কারণ উল্লেখযোগ্য। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ব্যাপক আবাদ, চাষ করায় এসব মাছের সঙ্গে দেশি প্রজাতির মাছ, বা মা মাছ খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। স্বাধীনতা পরবর্তী বিগত ৩০-৩২ বছর আগেও দেশে মাছ কিনে খাওয়ার রেওয়াজ ছিল না। শুধু ইলিশ ছাড়া মানুষ নিজের পুকুরের মাছ খেতেন। এরপর জাল, ডালা, খুচন নিয়ে মাছ ধরতে নেমে যেতেন। শোল, গজার, টাকি, চিংড়ি, শিং, কই, টেংরা, পাবদা, ফলিসহ নানা জাতের মাছ ধরা পড়ত। এখন সেসব পুকুরে চেলা, পুঁটি, বাইলা ছাড়া অন্য প্রজাতির কোনো মাছ পাওয়া যায় না। আশার কথা এখন পাবদা, টেংরা, বোয়াল, আইড় পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া ও  কৈ মাছের চাষ হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর