শিরোনাম
রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করুন : সন্তু লারমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২১ বছর চলে গেলেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি বলেন, অবিলম্বে চুক্তি বাস্তবায়ন এবং এ লক্ষ্যে সময়সূচি-ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করুন। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস সামনে রেখে গতকাল সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ৯ আগস্ট এই দিবসটি উদযাপিত হবে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আদিবাসী ভাষা চর্চা ও সংরক্ষণে এগিয়ে আসুন’।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর ভাষা সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। এ জন্য তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি এবং মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশে জাতীয় পর্যায়ে একটি ‘আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসী দিবস পালনসহ ১৩টি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সন্তু লারমা। এ সময় বক্তৃতা করেন আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের টেকনোক্রেট সদস্য জান্নাতে ফেরদৌসী লাকী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে আদিবাসী ফোরামের সহসভাপতি অজয় মৃ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আদিবাসী ফোরামের সভাপতি সন্তু লারমা বলেন, আমাদের বুঝতে হবে আদিবাসী কোনো জাতির নাম না। আদিবাসী হচ্ছে, একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ধারণ করে যারা বসবাস করছে, সেই বিশেষ বৈশিষ্ট্যমি ত জনগোষ্ঠীরাই হলো আদিবাসী। সে হিসেবে পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করা এই ১৪টি জাতিগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে। তিনি বলেন, মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট নৃ-ভাষা বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশে ৪১টি ভাষার সন্ধান পেয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ভাষা বিপন্ন। সেগুলো হলো খাড়িয়া, কোড়া, সৌরা, মু ারি, কোল, মালতো, খুমি, পাংখোয়া, রেংমিটচা, চাক, খিয়াং, লুসাই ও পাত্র। তবে আদিবাসী ফোরাম মনে করে বিপন্ন ভাষার সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচটি ভাষায় প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। কিন্তু কোথাও আলাদাভাবে এই ভাষার জনগোষ্ঠীদের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিনি অবিলম্বে বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষক নিয়োগ এবং সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা চালুর দাবি জানান।

সন্তু লারমা বলেন, বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভূমি জবরদখল ও তাদের চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার উদ্দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা, জবরদখল, ধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ বাড়ছে। বিশেষ করে নারীর ওপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত অন্যান্য দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও গত ২৩ বছর ধরে আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। এ দিবসটিও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা উচিত। রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসগুলা পালন করা হলে রাষ্ট্রের সম্মান বাড়বে। সারা দেশে ৯ তারিখে বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালন করা হবে। প্রতি বছর ৯ তারিখে মূল অনুষ্ঠান করা হলেও ৫ আগস্ট শহীদ মিনারে মূল অনুষ্ঠান করা হবে। সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা, ৭ আগস্ট ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে নারীর অধিকার বিষয়ক সেমিনার করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর