শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঋণ পুনঃতফসিলের অবৈধ সুযোগ ব্যাংকিং খাতকে সংকটে ফেলবে

----------- ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপিদের পুনঃতফসিলের অবৈধ সুযোগ প্রমাণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কায়েমি স্বার্থবাদী মহলের হাতে কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েছে। সংকটে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার পরিবর্তে তা ব্যাংকিং খাতকে আরও সংকটে ফেলবে। গতকাল টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা বলেন। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিজেদের নীতিমালাকেই পাশ কাটিয়ে শীর্ষ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের সুযোগ দিতে সম্মত হয়েছে; যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। একটি শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে; যা নজিরবিহীন। বাংলাদেশ ব্যাংক যে ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছে এটা তারই প্রমাণ। তিনি বলেন, ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের খবর বেরিয়েছে তা চাহিদা ঋণ, সংজ্ঞাগতভাবেই যা পরিশোধের মেয়াদ এক বছরের বেশি হওয়ার নিয়ম নেই। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৃহৎ ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ নীতিমালায় তারা এক দফা অন্যায্য সুবিধা পেয়েছে। এখন আবার সেই নীতিমালাকে পাশ কাটিয়ে তাদের ছয় বছরের জায়গায় ১২ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যেন প্রতিষ্ঠানটি খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হওয়া থেকে বেঁচে যেতে পারে।

এভাবে জনগণকে অন্ধকারে রেখে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার ঘটনায় আমরা রীতিমতো আতঙ্কিত বোধ করছি।

ড. জামান বলেন, শাসক গোষ্ঠী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেভাবে খেলাপি হয়ে যাওয়া বা অন্যায্য সুবিধার মাধ্যমে পুনঃতফসিলিকরণের সুবিধা পাওয়া ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করে জনগণের করের টাকার হরিলুট হয়েছে। এই লুটেরার একাংশই আবার ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের অন্যায্য সুবিধা নিয়ে আইনপ্রণেতা হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। দেশের অর্থনীতি এমন এক উল্টো পথে হাঁটছে যে, এখনই এর রাশ টেনে ধরা না গেলে ফিরে আসার আর কোনো পথ থাকবে না।

সর্বশেষ খবর