শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে বেগুনি রঙের ধান গাছের চাষ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

সদর উপজেলার চামেশ^রী এলাকায় বেগুনি রঙের ধান গাছের চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধান খেতের মধ্যে বেগুনি রঙের ধান গাছ দেখে অনেকে জানতে চান ধানের এমন হাল হলো কী করে? সবুজ ধানের বেষ্টনীর মধ্যে বেগুনি এ ধানখেতটি প্রথম দেখায় যে কারও কাছে মনে হতে পারে, কোনো কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে, অথবা আগাছানাশক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান খেত। কিন্তু উত্তর আসে- ধান খেত নষ্ট হয়নি, আগাছানাশক দিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আসলে ধান গাছের রং-ই বেগুনি। এই ধান গাছ দেখতে আলাদা হওয়ায় প্রতিদিন মানুষ ভিড় জমাচ্ছে ওই ধান খেতে। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, নতুন চাষ হওয়া এ ধানের নাম ‘পার্পল লিফ রাইস’।

 দেশে সর্বপ্রথম এ ধানের আবাদ হয়েছিল গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। ধানের রং সোনালি ও চালের রং বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছাপ্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একরপ্রতি ফলনও ভালো। একরপ্রতি ফলন ৫৫-৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু। ঠাকুরগাঁওয়ে বেগুনি ধান গাছের প্রথম চাষি সাবেক সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার একজন ওষুধ প্রতিনিধির মাধ্যমে ওই ধানের বিষয়ে জানতে পারি। পরে তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা দিয়ে ১ কেজি ধান সংগ্রহ করে ৬ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করেছি। শুনেছি এই ধান বোরো মৌসুমে ভালো হয়, তাই ওই জমি থেকে যে পরিমাণ ধান পাব সবটুকু দিয়ে বংশ বৃদ্ধি করব। নতুন এই ধান দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন। অনেক কৃষক এই ধান চাষ করতে বীজ চেয়েছেন। ভালো ফলাফল পেলে আগামীতে অন্য চাষিদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেব।

বড়গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাত কুমার সিং বলেন, শহিদুল ইসলাম পরীক্ষামূলক এ ধান চাষ করেছেন। ধান খেতটি নিজে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন। গাছের আকার-আকৃতি বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, অন্য ধানের তুলনায় ফলন ভালো হবে। সেই সঙ্গে আগামীতে আশপাশের এলাকায় ওই ধানের চাষ বৃদ্ধি পাবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্যান্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম চাষ হচ্ছে। একজন চাষি পরীক্ষামূলক চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। ধানখেতটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর ফলন কী রকম হবে, তা জানতে ধান কাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ধান বোরো মৌসুমের জাত।

সর্বশেষ খবর