শিরোনাম
সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
সমাপ্ত ‘বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ’

সন্ত্রাসবাদের স্থান বাংলাদেশে নেই

কক্সবাজার প্রতিনিধি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের স্থান বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনা সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে এটি দমন  করছে।’ ‘বাংলাদেশ-ভারত কৌশলগত অবস্থান’ বিষয়ে দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। গতকাল ‘কক্সবাজার ঘোষণা’র মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে ‘বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ’। তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বলানি খাত, আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতের সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি বলে ঐকমত্য হয়েছেন দুই দেশের অংশগ্রহণকারীরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে শুধু আশ্রয় নয়, জীবন ধারণের সব উপকরণ সরবরাহ করে পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। এ কারণেই শেখ হাসিনা ‘মাদার অব হিউমেনিটি’ উপাধি পেয়েছেন। তাদের দীর্ঘদিন রাখা আমাদের জন্য ভোগান্তির। বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। এটি ত্বরিত করতে ভারতসহ বন্ধুপ্রতিম অন্য দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগে এটিই উপযুক্ত সময়।’   

এ কে আবদুল মোমেন বলেন, একসময় বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করা হতো। কিন্তু আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ আলোচিত। সন্ত্রাসবাদের স্থান বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনা সরকার জিরো-টলারেন্স নীতিতে এটি দমন করছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগোলিকভাবেই বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও ঐতিহ্যময়। এ সম্পর্কের সূত্র ধরেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বর্তমানে নরেন্দ্র মোদি সরকারও আমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়েই পাশে রয়েছে। আমরা ভারতের এ ত্যাগের কথা কোনো দিন ভুলব না।’

আবদুল মোমেন বলেন, ‘গভীর বন্ধুত্বের কারণে ভারত আমাদের প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ সব দিক দিয়েই সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। উন্নয়নে আমরা সহযোগী হিসেবে পাচ্ছি নেপাল-ভুটানসহ প্রতিবেশী অন্য দেশগুলোকেও। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের বিরাজমান সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্ট করে তা নিরসন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈনিক অগ্রগতি ধরে রাখতে বন্ধুত্ব সংলাপ সেতুর মতো ভূমিকা রাখছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গুড গভর্নেন্স’ তৈরিতে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে তার সরকার অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে।

পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন টেকনো ইন্টারন্যাশরাল কলেজ অব টেকনোলজির পরিচালক ড. রাধা তমাল গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের উন্নত সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি ত্রিপুরায় গ্যাস সরবরাহ এবং মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিতে ভারত সরকার খুবই খুশি। তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাত, আঞ্চলিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তাসহ সব দিকের উন্নয়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’

টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেশনে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা ভারতীয় সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি বলেন, প্রযুক্তিতে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ক্রমান্বয়ে যুক্ত হচ্ছে সফলতা। বলতে গেলে সব সেক্টরে সফলতার গল্প তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা।

ভারতের রাজ্যসভার বিধায়ক এম জে আকবর বলেন, চলমান সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ, যা গত ২৫ বছরের চেয়ে ভিন্ন। বাংলাদেশ সব দিক দিয়ে দ্রুত এগোচ্ছে। প্রতিবেশী হিসেবে দুই দেশের সম্পর্ক আরও বন্ধুত্বপূর্ণ রাখা দরকার। দুই দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলা নদীগুলোর যতœ নিয়ে উভয় দেশের জনসাধারণের উপকারে ব্যবহারের উপযোগী রাখা জরুরি। এতে অর্থনৈতিকভাবে দুই দেশই লাভবান হবে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে কাজ করা জরুরি।

সংলাপে ভারতের ২৬ জন ও বাংলাদেশের ৫৪ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর