মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাবির আন্দোলনকারীদের পরিবারকে পুলিশি হয়রানির অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশ নেওয়া নেতৃস্থানীয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তাদের পরিবারের সদস্যদের ‘হয়রানি’ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্তত পাঁচজন সংগঠকের বাড়িতে পুলিশ গিয়ে ‘হয়রানি’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। এরা হলেন, জাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনীক, দফতর সম্পাদক হাসান জামিল, কার্যকরী সদস্য রাকিবুল হক রনি, ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিক উস সালেহিন। ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলাম অনীক বলেন, ‘আমার বাসায় পুলিশ গিয়েছিল। এতে আমার পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আমাদের আরও কয়েকজনের বাসায় পুলিশ গেছে। রাষ্ট্র কোনো বিষয়ে তদন্ত করতে চাইলে তার একটা নিয়ম আছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে পরিবারকে এ ধরনের হয়রানি কেন? আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’ মুশফিক উস সালেহিন বলেন, ‘পুলিশ আমার নানা বাড়িতে গিয়ে আমার পরিবারের বিস্তারিত তথ্য নিয়েছে। এরপর থেকে আমার পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত। তারা আমাকে নিয়ে এখন চিন্তিত। উপাচার্য ঊর্ধ্বতন যোগাযোগের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করছে। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলনকে দমনের চেষ্টা করা নিন্দনীয়।’ একইভাবে বাসায় পুলিশ যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাকিবুল হক রনি ও শোভন রহমান। এ বিষয়ে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আন্দোলনের সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘এভাবে আন্দোলনকারীদের বাসায় যাওয়া মোটেই ঠিক নয়। এতে তাদের পরিবার আতঙ্কের মধ্যে আছে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইন্ধন থাকতে পারে। আন্দোলনকে দমানোর একটি অপকৌশল হিসেবেই এসব করা হচ্ছে।’

তবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব বিষয়ে অবগত নয় জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পরেও তারা আইন অমান্য করে ক্যাম্পাসে মিছিল-মিটিং করছে। আর তাদের গ্রামে কী হচ্ছে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত নয়।’

এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদ। রবিবার এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল এবং সাধারণ সম্পাদক অনীক রায় বলেন, ‘সব তথ্য-উপাত্ত পাঠানোর পরও ভিসি ফারজানা ইসলামকে রক্ষার জন্য একের পর এক অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আন্দোলনকারীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এই দমন নীতি বন্ধ না করলে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নেবে। শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ধরনের দমন-পীড়ন চালানো হলে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা তাদের পাশে দাঁড়াবে।’

সর্বশেষ খবর