সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভাসানী স্মরণে সব সরকার অবহেলা করে আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত মওলানা ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ভাসানীর জন্ম ও মৃত্যুদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনে বর্তমান সরকারসহ সব সরকার অবহেলা করে আসছে। অথচ ভাসানী ছিলেন একাধারে কৃষক নেতা অন্যভাবে তাকে গণমানুষের নেতা হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়। জাতির দুর্ভাগ্য তাকে ভালোভাবে স্মরণ না করে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে। একশ্রেণির আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে রাজনীতিবিদরা তাকে নিয়ে এমন তুচ্ছভাব করছেন।  জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে গতকাল মওলানা ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকীর এই সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, হাজেরা সুলতানা, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ। রাশেদ খান মেনন বলেন, পাকিস্তানের শুরুতেই মওলানা ভাসানী এ দেশবাসীর চোখে স্বাধীনতার যে স্বপ্ন অঞ্জন পরিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্বে সেটিই রূপ নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান দেশকে সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার যে উদ্যোগ শুরু করেছিলেন, পিজি হাসপাতালের রোগশয্যা থেকে মওলানা তাকে রুখে দিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে অনুসারী পরিষদ : ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা গতকাল টাঙ্গাইলের সন্তোষে মজলুম জননেতার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, আক্তার হোসেন, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক, মোহাম্মদ ইসমাইল, কাজী মো. নজরুল, প্রচার সম্পাদক হান্নান আহম্মদ খান বাবলু ও আজমেরী বেগম ছন্দা।

একই কথা তার ‘ফারাক্কা লং মার্চ’ সম্পর্কে। সেই সত্তর দশকেই তিনি আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছিলেন, যা আজকের দিনে কেবল বাংলাদেশ-ভারতের জন্য নয়, বিশে^র জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে দাঁড়িয়েছে। কৃষক-খেতমজুর, শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির লড়াই মওলানা ভাসানীকে ‘মজলুম জননেতা’য় রূপান্তরিত করেছে। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা মওলানা ভাসানীর জন্ম ও মৃত্যুদিন পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকার অবহেলা করে আসছে। তিনি বলেন, এভাবে একজনকে অসম্মান করার কারণেই রাজনীতিবিদদের এমন অবস্থা।

সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। এদেশের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন মওলানা ভাসানী। তার আপসহীন নেতৃত্বেই ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয় এবং ১৯৭১ এর আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের জমিন তৈরি হয়।

সর্বশেষ খবর