‘নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৯’ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) মতো এই বিলটিও বৈধ নাগরিককে উদ্বাস্তু বানিয়ে দেবে। সোমবার কোচবিহারের নেতাজি সুভাষ চন্দ্র ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মিসভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ এনে মমতা বলেন, ‘তারা এখন বলছে এনআরসি’র বদলে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে আসবে। ওটা হচ্ছে আরেকটা খুড়োর কল। যারা এখানকার নাগরিক আছেন, তাদের ছয় বছরের জন্য বিদেশি বানিয়ে দেবে। আর ছয় বছর বাদে ওরা থাকবেও না। তখন ঠিক করবে কে নাগরিক হবেন, আর কে হবেন না। আমি বলছি বাংলায় আপনারা সবাই নাগরিক।’ এই বিলের উদ্দেশ্যই হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ, পার্সি, বৌদ্ধ ধর্মের মানুষদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া।
আসামে এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা থেকে কয়েক লাখ মানুষের নাম বাদ পড়া নিয়ে মমতা বলেন, ‘আসামে বলা হলো হিন্দুরা কেউ বিতাড়িত হবে না, কিন্তু ১৯ লাখের মধ্যে ১৪ লাখই তো হিন্দু বাঙালি আছে। তাদের সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হলো। এর মধ্যে গোর্খারাও আছে, হিন্দিভাষীরাও আছে। কী করে এটা হলো?’
এ সময় জনসভায় উপস্থিত মানুষদের মমতার পরামর্শ ‘আপনারা সীমান্তের দিকে খেয়াল রাখবেন। আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে কোচবিহার সীমান্ত জেলার একদিকে আসাম, অন্যদিকে বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র...।’গু াদের বিরুদ্ধে মা-বোনদের এগিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে আমরা হেরে গেছি, আমি তা ভাবতে রাজি নই। আমরা গুন্ডামির কাছে হেরেছি। যারা গুন্ডা হয় মানুষ যখন রুখে দাঁড়ায় তখন তারা পালিয়ে যায়। গুন্ডাদের বিরুদ্ধে মা-বোনদের সামনে দেবেন। মা-বোনরা হাতা-খুন্তি দিয়ে রান্নাও করেন আবার গুন্ডাদের জবাব দিতেও জানেন।’
এ দিন সন্ধ্যায় কোচবিহারের রাস মেলা ময়দানে আরেকটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মমতা এনআরসি ও নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগেন। ওই অনুষ্ঠান থেকে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীন ২০ জন বাসিন্দার হাতে আবাসনের চাবি তুলে দেওয়া হয়।