মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গজ-ব্যান্ডেজসহ পেট সেলাই, ধুঁকেই মৃত্যু প্রসূতির

রংপুর প্রতিনিধি

সিজারিয়ান অপারেশনের পর পেটের ভিতর গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে দেওয়া সেই প্রসূতি মা নাসিমা বেগম দশ দিন ধুঁকে গত রবিবার রাতে মারা গেছেন। তদন্ত কমিটি এ ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে।

নাসিমার বাবা নছির উদ্দিন ও স্বামী রাশেদুল জানান, গত ৫ নভেম্বর রংপুর নগরীর মীরগঞ্জ তামফাট এলাকার রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম নগরীর ধাপ এলাকায় অবস্থিত রোজ প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই তার সিজারিয়ান অপরারেশন করা হয় এবং তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। অপারেশন করার পর নাসিমা বেগমের পেটের ভিতরে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার পর তার পেট ফুলে যায় তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করার পর ১২ নভেম্বর রোজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে ভর্তি না করে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়।

বাসায় চলে আসার পর আবার তীব্র ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে নাসিমা বেগমকে ১৫ নভেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম করার পর পেটের ভিতরে গজ-ব্যান্ডেজ ধরা পড়ে। রবিবার বিকালে তার পেট অপারেশন করে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই রাতে মারা যান নাসিমা বেগম।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. স্বপন কুমার জানান, প্রসূতির অপারেশন করে পেটের ভিতরে গজ-ব্যান্ডেজসহ আরও কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যায়। রোগীর অবস্থা এমনিতেই গুরুতর ছিল। তার পেট ফুলে গিয়েছিল। ভিতরে রক্ত ক্ষরণ হওয়ায় রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, রোজ প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রোগীর স্বজনদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। নাসিমা বেগম মারা যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর ওই হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

এদিকে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব বর্ম্মন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় সহকারী সিভিল সার্জন ডা. সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর