শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এক প্রজ্ঞাপনেই রেলের শীর্ষ ১৯ পদে বদলি

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

রেলওয়েতে এক প্রজ্ঞাপনে ১৯ শীর্ষ কর্মকর্তার রদবদল হয়েছে। হঠাৎ এত বড় বদলি নিয়ে রেল অঙ্গনে নানা প্রশ্ন উঠেছে খোদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝেই। ১৭ ডিসেম্বর এ বদলি আদেশের ফলে অন্যদের মাঝেও নানা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো সময় আরও আদেশ আসছে কিনা সে বিষয়ে কর্মক্ষেত্রে দায়সারাভাবে কাজ করছেন অনেকেই। অনেকে মন্তব্য করছেন, এটি ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা সিন্ডিকেট করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষু্ণ্ন করতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে এসব বদলি করিয়েছেন। অনেকেই কয়েকটি পদে দায়িত্ব পালন করছেন, অনেকেই বছরও পার করেননি। দায়িত্ব নিয়ে কর্মকৌশল সৃষ্টি করার আগেই কৌশলী চক্রের স্বার্থেই এসব বদলি করা হয়েছে। তবে ১৯ জনের আদেশের মধ্যে কয়েকটি পদের বদলি নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রেল অঙ্গনে। এসব ‘সরাসরি’ খতিয়ে দেখার প্রশ্নও উঠেছে। কার, কোন স্বার্থে এসব বদলি একসঙ্গে করেছে। তাছাড়া ঊর্ধ্বতন কিছু কর্মকর্তা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করতে এসব রদবদল করানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বলেছেন, ১৭ ডিসেম্বরের রদবদলকে রেলের সুনাম ফিরিয়ে আনার কৌশল হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে ঊর্ধ্বতন বিতর্কিত কয়েকজন কর্মকর্তার একান্ত অনুগতদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের চেষ্টা হিসেবেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। অঞ্চলভিত্তিক রেলের ১৩টি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যেও বদলি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অপারেটিং বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ সিওপিএস ও সিসিএম। পরিবহন ও বাণিজ্যিক কর্মকা-ের দুই প্রধানকে বদলির মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই রদবদল করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি দুর্ঘটনার কারণে পরিবহন বিভাগের নি¤œশ্রেণির কর্মীদের ওপর দায় চাপিয়ে একাধিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে পরিবহন বিভাগের চালক, গার্ডসহ বিভিন্ন গ্রেডের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বড় দুর্ঘটনা, যাত্রী সেবার মান ও আয় কমে যাওয়াসহ দাফতরিক প্রয়োজনে এই রদবদল হয়েছে। তবে দুই যুগের ব্যবধানে বড় এ রদবদলে রেল পরিবহনের নড়বড়ে অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে। এ ছাড়া বিপুল বিনিয়োগের পরও রেলের সেবার মান আশানুরূপ বাড়েনি। একের পর এক নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর পরও আয় বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রেলে। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয় ৮ কোটি টাকা কমে হয়েছে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন খাতে আয় কমে যাওয়ায় সার্বিক আয়ে এর প্রভাব পড়েছে। মূলত কোচসহ অবকাঠামো সুবিধা বাড়লেও জনবল ও ইঞ্জিন সংকটে রেলওয়ের সেবার মান আশানুরূপ বাড়ছে না।

সর্বশেষ খবর