রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

নওগাঁয় কৃষকের অ্যাপ ১৬ জেলায় কার্যক্রম শুরু

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

কোনো হয়রানি ছাড়াই এবার সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান, চাল ও গম কিনবে ‘কৃষকের অ্যাপ’ নামে একটি সফটওয়ারের মাধ্যমে। সারা দেশে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১৬টি জেলার সদর উপজেলায় কৃষি অ্যাপের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষক নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নিবন্ধন শেষে কৃষক নিজের পণ্য সরকারি গুদামে সরবরাহ করে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন। ঘরে বসেই বিক্রি ও মূল্য বুঝে নেবেন তারা। আর নিবন্ধন সফল করতে জেলা প্রশাসন, খাদ্য বিভাগ ও কৃষি বিভাগ আলোচনা সভা, মাইকিং, পোস্টারসহ ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

এবারই প্রথম ধান, চাল, গম কিনতে এই পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। গুগলের প্লে-স্টোর থেকে প্রথমে নামাতে হবে অ্যাপসটি। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র, কৃষি কার্ডের নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মালিকানা হিসেবে কৃষকের কাছে সংরক্ষিত থাকবে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড। সরকার শস্য কেনা শুরু করলে এই অ্যাপসের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগের কাছে আবেদন করতে পারবেন কৃষক। এরপর বরাদ্দকৃত ধান বিক্রি হলে মূল্য প্রাপ্তির বার্তা সরাসরি চলে যাবে কৃষকের মোবাইলে। নওগাঁ সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ২৫ নভেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বক্তারপুর গ্রামের কৃষক আমান মোল্লা, শচিন দেবনাথ জানান, কৃষক নিবন্ধনের প্রচার শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারি-সুযোগ-সুবিধা নিতে নিবন্ধন করছেন। ইতিপূর্বে তারা কৃষি কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি কৃষি সুবিধা পেয়েছেন। এতে তারা লাভবান হবেন। ধানের দাম পাবেন। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি তাদের এ বিষয়টি নিয়ে ট্রেনিং দেয় তাহলে তারা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন অ্যাপসটি। সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতোয়ার হোসেন জানান, কোনো দালাল বা ফড়িয়া ছাড়াই ইউনিয়ন পরিষদের কৃষক নিবন্ধিত হয়ে সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে পারবেন। আগে কৃষকরা রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে হয়রানি হতো। এখন কোনো হয়রানি হতে হবে না।

নওগাঁ সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, কৃষক পর্যায়ে ধান কেনার স্বচ্ছতা আনতে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কৃষক অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এতে কারও কোনো প্রশ্ন থাকবে না। কার কাছ থেকে কিনেছি, কী পরিমাণ কিনেছি এবং কেউ চালাকি করতে পারবে না। আর এই অ্যাপ ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম জানান, এই পদ্ধতির সুফল অনেক। কৃষকরা নির্দিষ্ট সময় এবং স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ধানের আর্দ্রতা যাচাই-বাছাই করে কোন্ োগুদামের ধান সরবরাহ করতে হবে তা জানতে পারবেন এবং ওই অ্যাপের মাধ্যমেই কৃষকরা টাকা পাবেন তার নিজের ব্যাংক হিসাব নাম্বারে।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানান, কৃষি অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনার উদ্যোগ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যে কৃষকরা ধান সরকারি গুদামে দেওয়ার অনুমোদন পাবেন সেই কৃষকরা স্থানীয় ব্লক সুপারভাইজারের মাধ্যমে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপ করবেন। কোন কৃষকের ধানে আর্দ্রতা যদি কম থাকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। আর্দ্রতা কম থাকলে বা সন্দেহ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা খতিয়ে দেখবেন। কৃষকের অ্যাপ-এ নিবন্ধনের শেষ সময় ৭ ডিসেম্বর। আর ধান বিক্রির আবেদন করা যাবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর