নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। তারা হলেন নিজাম উদ্দিন, রায়হান ভূইয়া, হানিফ উদ্দিন সুমন, শেখ ইফতেখারুর ইসলাম ওরফে আরিফ ও মুফতি মুসলিম উদ্দিন ওরফে মুসলিম। গত রবিবার রাজধানীর সবুজবাগের বালুর মাঠ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি চাপাতি, তিনটি ব্যাগ ও চারটি স্মার্টফোন জব্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির যুগ্ম-কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, গ্রেফতার পাঁচজন রাজধানীর ইসকন মন্দিরে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই পুলিশের হাতে তারা ধরা পড়েন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা ঢাকায় আসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টেলিগ্রাম, অনলাইন চ্যাট গ্রুপ ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে তারা যোগাযোগ করতেন এবং অনলাইনে অর্থ সংগ্রহ করতেন।
সিটিটিসি কর্মকর্তা আরও জানান, গত বছরের নভেম্বরে ইসকন মন্দিরে হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ওই জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল নামে এক কুয়েতপ্রবাসী জঙ্গির তথ্য বেরিয়ে আসে। তিনি জঙ্গিবাদবিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণ করায় নির্মাতা খিজির হায়াত খানকে হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন। নাজমুল কুয়েতে থাকা অবস্থায় ?এসো কাফেলাবদ্ধ হই’ নামে একটি গ্রুপের মাধ্যমে ওই হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দেন। এরপর সেখান থেকে দেশে ফিরে গ্রেফতার জঙ্গিদের সমন্বয়ের চেষ্টা এবং ইসকন মন্দিরে পুনরায় হামলার পরিকল্পনা করছিলেন।গ্রেফতার পাঁচজন আনসার আল ইসলামের আদর্শের অনুসারী। সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটাতে প্রশিক্ষণ নিতে তারা ঢাকায় এসেছিলেন। নাজমুলের আহ্বানে সাড়া দিয়েই তারা ঢাকায় গোপন বৈঠকে মিলিত হন। এদের সঙ্গে দুবাইপ্রবাসী আরও এক জঙ্গি ছিলেন, যার নাম আবু কায়সার ওরফে রনি। তিনিও ইসকন মন্দিরে হামলা ও খিজির হায়াত খান হত্যার পরিকল্পনায় ছিলেন। তিনি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে আছেন। আবু কায়সার ও নাজমুলকে ধরতে অভিযান চলছে।
সিটিটিসি কর্মকর্তা ইলিয়াছ জানান, গ্রেফতার নিজাম চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসায় চাকরি করেন। রায়হান মালয়েশিয়ায় ছিলেন, কিছুদিন আগে দেশে আসেন। হানিফ চট্টগ্রামের একটি শিপ ব্রেকিংয়ে চাকরি করেন। ইফতেখারুল ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেরিনারি মেডিসিনের ওপর অনার্স-মাস্টার্স করেছেন। আর মুসলিম উদ্দিন ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে একটি মাদ্রাসায় চাকরি করেন।