শুক্রবার, ১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
অর্থমন্ত্রী ও মিলারের ফোনালাপ

করোনা মোকাবিলায় কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। ২০১৩ সালে আমাদের জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়েছে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো চুক্তি (টিকফা) স্বাক্ষরিত হয়। যদিও অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশের সমস্যা এখনো মীমাংসিত হয়নি। তিনি বলেন, কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে সৃষ্ট বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশাধিকার এবং বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলারের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি এবং সহযোগিতা নিয়ে ফোনে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে অর্থমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান। প্রকল্প সহায়তা, খাদ্য সহায়তা এবং পণ্য সহায়তা হিসেবে এ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার জন্য এবং কভিড-১৯ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ামূলক কর্মসূচিতে ৩ দশকি ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি সহায়তার জন্যও তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জরুরি সেবা কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ  ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দেশের সিংহভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছোটখাটো কারখানা বন্ধ। গণপরিবহন ও বিমান চলাচল স্থগিত। করোনার প্রভাবে আমাদের আমদানি-রপ্তানির ওপর  নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এবং স্থবিরতা নেমে এসেছে  রেমিট্যান্স প্রবাহে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এই প্যাকেজের অর্থ ব্যয়ে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা জালকে প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর  দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটিরশিল্পগুলোকে সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

রবার্ট আর্ল মিলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্র এই সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজের ওপর কভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা জোরদার, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিষেবা, সক্ষমতা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সমর্থন বাড়ানোর অনুরোধ করেন। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা নেট প্রোগ্রাম প্রশস্তকরণে সমর্থন দেওয়া, উন্নয়নের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব  ফেলতে সক্ষম কৃষি যান্ত্রিকীকরণের অর্থায়নে সহায়তা; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তারও অনুরোধ করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

সর্বশেষ খবর