সোমবার, ৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই অর্থনৈতিক চাকা সচল করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি

--------------------------- বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন- বর্তমান সময়ে আমরা অনেকটাই সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই মহামারীর সময়ে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা, তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে বিভিন্ন দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন দেশের সব ধরনের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ সব বিষয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আমরা ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক চাকা সচল করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আসন্ন বাজেটেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আশা করছি- খুব শিগগিরই সব সংকট কাটিয়ে দেশকে আবার উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। গতকাল ব্যবসায়ী- এফবিসিসিআই আয়োজিত অনলাইন আলোচনায় এ সব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি। সংগঠনটি গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য উল্লেখ্য করে বলেছে, ওই আলোচনায় বক্তব্য দেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমপি, এ কে আজাদ ও আবদুল মাতলুব আহমেদ, সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড-বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রমুখ।

 বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাশ উদ্দিন ও ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মারসি মিয়াং টেম্বন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ, ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক- আইডিবি’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসিম বিন সুলাইমান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট মুহাম্মদ ইমাম হুসাইন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর সদস্য- এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

ওই অনলাইন আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন- ‘এই মুহূর্তে আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী করতে হবে। কারণ মানব শক্তি ছাড়া কোনো ভাবেই অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা যাবে না। সেজন্য টেলিমেডিসিন সেবাকে আরও বেশি সক্রিয় করতে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য খাতের মধ্যে আইটি ব্যবস্থাকেও একত্রিত করতে হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘বর্তমান সময়ে দেশের সব স্তরের মানুষ দৃষ্টান্তমূলক একটি মানবতা দেখিয়েছে। দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই একটি উপদেষ্টা কাঠামো প্রণয়ন হিসেবে কাজ করছে। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব বের করতে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের নেতা, স্টেকহোল্ডার, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও শিল্পনেতাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করে চলছে এফবিসিসিআই।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘দেশের এই মহামারীর সময়ে অর্থনৈতিক চাকা সচল রেখে দেশের স্বাস্থ্য খাত, শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী। এমন সময়েও আমাদের অনেকগুলো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে । তার পরেও আমাদের অর্থনৈতিক দিক ঠিক রয়েছে। তবে করোনা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এই পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরের বাজেট আমাদের চরম দারিদ্র্যসীমা উত্তরণে সাহায্য করলেও, করোনা আবারও সেই অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়েছে। সরকার ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজগুলো যদি কার্যকর হয়, তাহলে করোনা মহামারীর ক্ষতি আমরা শিগগিরই কাটিয়ে উঠতে পারব। এছাড়া দেশের কৃষি খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের রপ্তানি খাতকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলতে পারি এবং সেসঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আকৃষ্ট করা সম্ভব।’

কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষি পণ্য উৎপাদনের দিক দিয়ে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। মহামারীর সময়ে দেশে যাতে খাদ্যের সংকট না পরে সেজন্য করোনা আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কৃষকরা প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য উদ্বৃত্ত উৎপাদন করে আসছে। এছাড়া জনগণের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রপ্তানির খাতের দিকেও নজর দিতে হবে। কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এখন কৃষি পণ্য উৎপাদনকে কাজে লাগাতে হবে। সেই সুযোগটা কাজে লাগানোর সঠিক সময় হচ্ছে এই করোনা কাল।’

সর্বশেষ খবর