শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অবরোধ

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এলিগেন্স গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গতকাল কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, সদর উপজেলার হোতাপাড়া মণিপুর এলাকায় এলিগেন্স গ্রুপের ক্যাসিওপিয়া অ্যাপারেলস ও ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন কারখানা রয়েছে। এ দুটি কারখানায় সাড়ে তিন সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করে। সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এসে কাজে যোগ দেয়। সকাল ৯টার দিকে কর্তৃপক্ষ হঠাৎ কারখানার সাত শতাধিক শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়ে তালিকা প্রকাশ করে। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তারা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি শুরু করে।

একপর্যায়ে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে।

শ্রমিকরা জানায়, যারা দীর্ঘদিন চাকরি করছেন তাদের বেশির ভাগই রয়েছে ছাঁটাইয়ের তালিকায়। শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে ছাঁটাইকৃতদের পরবর্তীতে নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ছাঁটাইয়ের পর নিয়োগ দেওয়া হলে চাকরির ধারা অব্যহত থাকবে না। তারা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এ কারণে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। একপর্যায়ে পুলিশের উদ্যোগে আলোচনা শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক ছাঁটাই কার্যক্রম বাতিল করার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে। 

কারখানার নির্বাহী পরিচালক রবি আজম জানান, বর্তমানে পোশাক তৈরির অর্ডার না থাকায় ক্যাসিওপিয়া অ্যাপারেলস ও ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশন কারখানা দুটিতে উৎপাদন কাজ নেই। এ ছাড়াও রপ্তানির জন্য প্রায় সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ১৫ লাখ তৈরি পোশাক শিপমেন্টের অভাবে পড়ে রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্রেতারা (বায়ার) ওই সব পোশাক সরবরাহ নিচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে এ প্রতিষ্ঠানটি। উপায়ান্তর না পেয়ে গত ২৭ মার্চ কারখানা দুটি লে-অফ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

তিনি জানান, কারখানায় কাজ না থাকায় কিছু শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সপ্তাহ খানেক আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিজিএমইএর সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে ছয়টি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক, কলকারখানা অধিদফতর ও শ্রমবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সবার সম্মতিতে ছাঁটাইয়ের জন্য প্রায় সাড়ে ৭শ’ শ্রমিকের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনাদি পরিশোধেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে আধা ঘণ্টা পর শ্রমিকরা মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।

সর্বশেষ খবর