বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

পুলিশের নির্যাতনে কলেজছাত্রের কিডনি বিকলের অভিযোগ

যশোরে তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে পুলিশের পিটুনিতে ইমরান হোসেন (২৩) নামে এক কলেজছাত্রের কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইমরান এখন শহরের বেসরকারি কুইনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তদন্ত কমিটি ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। ইমরান হোসেন যশোর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর গ্রামের রাকিব উদ্দীনের ছেলে এবং সদর উপজেলার কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ইমরান বলেন, বুধবার সন্ধ্যার দিকে তিনি চৌগাছার সলুয়া বাজার থেকে ইজিবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় তার সাথে এলাকার আরেকটি ছেলে ছিল। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সাজিয়ালী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ইজিবাইক থামিয়ে তল্লাশি শুরু করে। এসময় ভয়ে ইমরান সেখান থেকে দৌঁড় দেন। প্রাই দুই কিলোমিটার ধাওয়া করে পুলিশ তাকে ধরে বেদম মারপিট করে এবং তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি দেখতে পান, তাকে পাশের আমবটতলা বাজারের একটি ফার্মেসিতে নেওয়া হয়েছে। এসময় পুলিশ তার পকেটে গাঁজা দিয়ে আটকের কথা বলে। ইমরানের বাবা রাকিব উদ্দীন বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ইমরানের মোবাইল ফোন দিয়ে পুলিশ তাকে ফোন করে জানায়, ইমরান অসুস্থ।

সেখানে গেলে ইমরানকে ছাড়াতে পুলিশ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে ৬ হাজার টাকা দিলে পুলিশ ইমরানকে ছেড়ে দেয়। রাতে ইমরান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার শহরের বেসরকারি কুইন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক উবায়দুল কাদির বলেন, ইমরানের দুটি কিডনিই খুব খারাপ অবস্থায় আছে। রবিবার থেকেই ডায়ালিসিস শুরু হয়েছে। কিডনি ভাল হবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সাজিয়ালি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মুন্সী আনিসুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় ফাঁড়ির দায়িত্বে ছিলেন সহকারী উপপরিদর্শক সুমারেশ সাহা, সাজদার রহমানসহ  চার কনস্টেবল। এ ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা বলেছেন, ওই কলেজছাত্র বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। নির্যাতন বা টাকা পয়সা নেওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। ইমরানের বাবা তার ছেলেকে নির্যাতনের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি যশোরের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর